ঝালকাঠি সংবাদদাতা ॥ ছাত্রীর সাথে যৌন কেলেংকারীর ঘটনায় ঝালকাঠি সদর উপজেলার রনমতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিম মিয়াকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম নবী এক অফিস আদেশে তাকে সাসপেন্ড করেন।
অভিযোগ সূত্রে প্রকাশ, গত ২১ মে সদর উপজেলার কেওড়া ইউনিয়নের রনমতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিম মিয়া কর্তৃক ৪র্থ শ্রেনীর এক ছাত্রীর সাথে ‘যৌন হয়রানীর চেষ্টা চালায়। বিষয়টি স্থানীয় দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী দেখে ফেলায় শিক্ষকরে নিয়ে বৈঠক করে। বিষয়টি এলাকার লোকজনের মাঝে জানাজানি হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্র-ছাত্রীরা ঐ শিক্ষকের বিচারের দাবীতে অনিদিষ্টকালের জন্য স্কুল বন্ধ ঘোষনা করে। এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দু’লাখ টাকা নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা মিডিয়া ও শিক্ষা বিভাগ ম্যানেজ বানিজ্যে নামে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে গত ২৩ মে ঝালকাঠি সদর উপজেলা শিক্ষা মো. কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম ঘটনাতদন্তে সরেজমিনে যান। সেখানে তিনি ছাত্র-ছাত্রী, ম্যানেজিং কমিটিসহ স্থানীয় প্রায় ২০ জনের লিখিত স্বাক্ষ্য ও অভিযোগ গ্রহন করেন। এতে তিনি ঘটনার সত্যতা পেয়ে পরদিন ২৪ মে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন।
শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাগেছে, ২০১০ সালের নভেম্বরের দিকে কীর্ত্তিপাশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর এক হিন্দু ছাত্রীর সাথে যৌন কেলেংকারীর ঘটনায় তাকে আরেকবার সাসপেন্ড করা হয়। ৬ মাস পরে সাসপেন্ড প্রত্যাহার করে তাকে নবগ্রাম ইউনিয়নের জগদীশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। ঐ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী , শিক্ষক ও স্থানীয়রা তাকে যোগদান করতে দেয়নি। পরে তাকে পোনাবালিয়া ইউনিয়নের ভাওতিতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়। ভাওতিতা থেকে বদলী হয়ে গত বছরের অক্টোবর মাসে রনমতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান।
উল্লেখ্য, গত ২১ মে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষক সেলিম মিয়া ৪র্থ শ্রেনীর (১৪) বছরের এক ছাত্রীকে নিয়ে স্কুলের পাশের একটি পরিত্যক্ত টয়লেটে নিয়ে যায়। সেখানে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানী চালায়। ঘটনাটি স্থানীয় দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী দেখে ফেলায় বিদ্যালয়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হলে শিক্ষক সেলিম কৌশলে পালিয়ে যায়।