গৌরনদীর খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ডোনারকান্দি গ্রামে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে নির্যাতন করে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ডোনারকান্দি গ্রামে শনিবার রাতে যৌতুকের দাবিতে যৌতুক লোভী পাষান্ড স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বেদম পিটুনি দেয়। পিটুনিতে গৃহ বধু নিপা অধিকারী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। গভীর রাতে নিপার পিতার বাড়ির পাশে লাশ ফেলে তার স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন গা-ঢাকা দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে গতকাল রবিবার ভোর রাতে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নিপার শ্বাশুড়ি রিতা সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে।

স্থানীয়, পুলিশ ও নির্যাতিতার পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলার ডোনারকান্দি গ্রামের দিনমজুর নির্মল অধিকারীর মেয়ে নিপা অধিকারী প্রতিবেশী শ্রী কৃষ্ণ সরকারে পুত্র দিপঙ্কর সরকারের সাথে প্রেম করে। পরিবারের অমতে গত বছর মে মাসে পালিয়ে বিয়ে করে।

নির্যাতিত নিপার কাকা সহদেব অধিকারী বলেন, আমাদের অমতে বিয়ের পর থেকেই দিপঙ্কর সরকার তার ও পরিবারবর্গ ব্যবসার জন্য আমার ভাতিজির কাছে এক লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছে। নিপার পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দিপঙ্কর ও তার পরিবারের লোকজন প্রাই শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করত। আমার ভাতিজি শুধু তার ভবিষৎতের কথা ভেবে এসব নির্যাতন মুখ বুঝে সয্য করেছে। নিপা তার পিতা মাতার কাছে বিষয়টি না বলতে পারলেও সে আমাকে প্রায়ই জানাত। সর্বশেষ শনিবার  রাত সাড়ে ৮ টার এ নিয়ে দিপঙ্করের সাথে নিপার কথার কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ঘরের মধ্যে আটক করে জরজার লাঠ দিয়ে বেদম পিটুনি দেয়। পিটুনিতে নিপা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। অজ্ঞান অবস্থায় রাত ১০ টার দিকে পাষান্ড স্বামী কালকিনি হাসপাতালে নেয়ার পথিমধ্যে নিপা মারা যায়। গভীর রাতে দিপঙ্কর নিপার পিতার বাড়ির পাশে বরদা কান্তের বাড়ির উঠানে লাশ ফেলে দিপঙ্কর ও তার পরিবারবর্গ পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ রবিবার সকাল সাড়ে ৪ টার সময় লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় নিহত গৃহবধু নিপার কাকা পরিমল অধিকারী বাদি হয়ে নিহতের স্বামী দিপঙ্কর সরকার, শ্বশুর শ্রী কৃষ্ণ সরকার, শ্বাশুড়ি রিতা সরকার ও নিকটতম আত্মীয় দেবাশিষ সরকার, বিল্পব সরকার ও সুভাষ সরকারকে আসামি করে হত্যা মমালা দায়ের করেন। পুলিশ এজাহার ভুক্ত আসামি রিতা সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে। গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।