ফাজিল পরীক্ষা – বরিশালে আ’লীগ নেতার পরীক্ষা বানিজ্য

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের মুলাদী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল চরকালেখা ইউনিয়নে ফাজিল প্রথম, ২য় ও ৩য় বর্ষের পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলের মহোৎসব চলছে। মুলাদী সদরের পরীক্ষা কেন্দ্রটি প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরবর্তী প্রত্যন্ত ইউনিয়ন চরকালেখায় সাতটি মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপদে নকল চালিয়ে যাচ্ছে।

বুধবার বাংলা পরীক্ষা চলাকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চরকালেখা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও উক্ত কেন্দ্রের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মহিউদ্দিন আহমেদের কক্ষে বসে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশ্রাফুর জামান খোস গল্পে মসগুল। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত নকলে। সরেজমিনে আরো দেখা গেছে, উক্ত মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের শিক্ষক ইলিয়াস আলী ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে পাঠদানের মতো করে পরীক্ষার খাতা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা ও চরকালেখা মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি আব্দুল বারী ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সদর থেকে ১০/১২ কিলোমিটার দূবরর্তী চরকালেখা মাদ্রাসায় এ কেন্দ্রটি তদ্বিরের মাধ্যমে স্থান্তর করেন। সূত্রে আরো জানা গেছে, চরকালেখা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মহিউদ্দিনের আহমেদের মাধ্যমে নকল বাবদ ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। আজ বুধবার এ কেন্দ্রে উপজেলার ৭টি মাদ্রাসার মোট ২২৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহন করে। এরমধ্যে ১১৮ জন ছাত্র ও ১০৬ জন ছাত্রী।

সূত্রমতে, মুলাদী উপজেলার চরখালেকা থেকে ২০/২৫ কিলোমিটার দূরবর্তী স্থান নাজিরপুর, চরলক্ষীপুর, রামারপুল, হিজলা বাহেরচরের ৫টি মাদ্রাসা থেকে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে এ পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা দিচ্ছে। অবশ্য নকলের সুবিধা থাকায় পরীক্ষার্থীরা এ নিয়ে কোনো ঝামেলাও করছে না। এ ব্যাপারে মুলাদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রটি ১০ কিলোমিটার দূরবর্তী স্থানে হওয়ায় যাতায়াতে বেশ সমস্যা রয়েছে। আমি যখন পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাই তখন গিয়ে কোনো নকল দেখতে পাই না। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। আওয়ামীলীগ নেতা ও মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি আব্দুল বারী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার প্রতিপক্ষের লোকজনে আমার বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটিয়ে বেড়াচ্ছে।