হুমকির মুখে চথলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় – উজিরপুর-সাতলা সড়ক বিছিন্ন – চার ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ

খোকন আহম্মেদ হীরা, চথলবাড়ি (উজিরপুর) থেকে ফিরে ॥ ভারী বর্ষন ও জলোচ্ছাসের কারনে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার চথলবাড়ি এলাকার আব্দুল মজিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি নদী ভাঙ্গনের চরম হুমকির মুখে রয়েছে। গত পাঁচদিন ধরে একটানা বর্ষন ও জলোচ্ছাসের কবলে উজিরপুর-সাতলা জেসি সড়কের হুমকির মুখে চথলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় - উজিরপুর-সাতলা সড়ক বিছিন্ন - চার ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধচথলবাড়ি এলাকার বাইপাচ সড়কটি সোমবার বিকেলে ভেঙ্গে গেছে। ফলে উজিরপুর উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় সাতলা, হারতা, ওটরা ও বরাকোঠা ইউনিয়নের হাজার-হাজার জনসাধারনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। অপরদিকে চথলবাড়ি জামে মসজিদটি ২/১ দিনের মধ্যে সম্পূর্ন ভাবে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজ সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ১৯৬৯ সনে প্রতিষ্ঠিত চথলবাড়ি আব্দুল মজিদ মাধ্যমিক বিদ্যলয়টি প্রমত্তা সন্ধ্যা নদীর করাল গ্রাসে যেকোন মুহুর্তে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিপূর্বে চথলবাড়ি বাজার, চথলবাড়ি সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়, আবু সাঈদ খুদরী জামে মসজিদ ও পরমানন্দ সাহা, সাকরাল গ্রামসহ এলজিইডি’র ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত উজিরপুর-সাতলা সড়কের চথলবাড়ি ব্রীজটি সম্পূর্ন ভাবে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়া সাতলা ও হারতা ইউনিয়নের নদীর পাড় সংলগ্ন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাস্তা ঘাট ও বিভিন্ন গ্রাম হুমকির মুখে রয়েছে। হারতা ইউনিয়নের নাথারকান্দি সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়টিও নদী ভাঙ্গনের কবলে পরার আশংকা রয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপুল দাস জানান, স্কুলটি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেলে এ অঞ্চলের প্রায় ৩ শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা চরম ভাবে বিঘ্নিত হবে।

সূত্রমতে, গত ৫ বছর ধরে উজিরপুর-সাতলা সড়কের চথলবাড়ি বাজারসহ একাধিক গ্রাম রাক্ষুসী সন্ধ্যা নদীর গ্রাস করে নিয়েছে। ২০১০ সনে স্থানীয় সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি’র উদ্যোগে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী হারুন-অর রশিদ চথলবাড়ির ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য ১১ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন। বর্তমানে যা মন্ত্রনালয়েই ফাইল বন্দি অবস্থায় রয়েছে। ফলে ভাঙ্গন প্রতিরোধের স্থলে গত ২ বছরে নদী ভাঙ্গন আরো তিব্রতর হয়েছে। যার ফলে চথলবাড়ির শেষ চিহ্ন হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকা আব্দুল মজিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি সম্পূর্ন ভাবে নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে মাত্র। অন্যদিকে চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি মাসে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য ১ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকার দরপত্র আহ্বান করে। এম বিল্ডার্স নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঊর্দ্ধদরে কাজটি পায়। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানটি যথাসময় কাজ শুরু না করার কারনে নদী ভাঙ্গন কবলিতরা নদী ভাঙ্গন থেকে বাঁচার জন্য মানবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে প্রতিবাদ করেছেন। বর্তমানে ওইসব গ্রামের হাজার-হাজার গ্রামবাসী ভাঙ্গনের আতংকে দিনাতিপাত করছেন।

এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বাদল বলেন, চথলবাড়ির ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সোমবার জেলা পরিষদের সমন্ময় সভায় চথলবাড়ির নদী ভাঙ্গনের বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতি উপস্থাপন করা হয়েছে।