বরিশালে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্নর নামে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২’র বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা জোনাল অফিসের কতিপয় অসাধু লাইনম্যানরা বকেয়া বিদ্যুত বিল থাকার অজুহাতে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্নর নামে গ্রাহকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘুষ বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে গ্রাহকদের ভুতুড়ে বিল প্রদান, সাইড লাইন দেয়াসহ নতুন বিদ্যুত সংযোগ দিতেও গ্রাহকদের কাছ থেকে অসদ উপায়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে এসব উপজেলার বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা সংশ্লিষ্ট অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও লাইনম্যানদের কাছে রিতিমতো এখন জিম্মি হয়ে পড়েছে।

গৌরনদী পৌর এলাকার দক্ষিণ বিজয়পুর মহল্লার বাসিন্দা ও পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক খোন্দকার কাওছার হোসেন অভিযোগ করেন, তার একমাসের বিল বকেয়া থাকায় পল্লী বিদ্যুতের গৌরনদী জোনাল অফিসের এক লাইনম্যান অতিসম্প্রতি তার বাড়িতে গিয়ে বকেয়া বিলের জন্য তার স্ত্রীর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করেন। তিনি আরো অভিযোগ করেন, একপর্যায়ে লাইনম্যান তার স্ত্রীকে লাইন বিচ্ছিন্নের ভয়দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা উৎকোচ দাবি করেন। এতে তার স্ত্রী অস্বীকৃতি জানালে লাইনম্যান তার বসত ঘরের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়। একই অভিযোগ করেন দিয়াশুর মহল্লার বাসিন্দা জামাল হাওলাদার, গেরাকুল মহল্লার বাসিন্দা গোলাম মোর্শেদসহ অনেকেই।

গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা হওয়া সত্বেও আগৈলঝাড়া জোনাল অফিসের আওতাধীন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক ঘরামী অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন থেকে তিনি নতুন বিদ্যুত সংযোগ পেতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুত অফিসে আবেদন নিবেদন করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নতুন বিদ্যুত সংযোগ পেতে বিলম্ব হওয়ায় তিনি পাশ্ববর্তী ছালাম মোল্লার ঘর থেকে সাইড লাইন নিয়ে ব্যবহার করেন। এজন্য আগৈলঝাড়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারের নির্দেশে প্রতিমাসে লাইনম্যানকে তার ৫০ টাকা করে দিতে হয়। একই অভিযোগ করেন ওই গ্রামের আক্তার হোসেন, সামচুল হক ঘরামী, নুর মোহাম্মদ হাওলাদারসহ অনেকেই। এরইমধ্যে গত ১৯ জুন লাইনম্যান সাইড লাইন ব্যবহারকারীদের কাছে ৫০ টাকার স্থলে প্রতিমাসে ১’শ টাকা করে দাবি করেন। এতে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক ঘরামী ও আক্তার হোসেন অস্বীকৃতি জানালে লাইনম্যান তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। দিনমজুর নুর মোহাম্মদ হাওলাদার জানান, ওই গ্রামের ৩০টি মিটার গৌরনদী উপজেলার মধ্যে হওয়া সত্বেও তাদের বিল পরিশোধসহ বিদ্যুত অফিসের সকল কাজের জন্য আগৈলঝাড়া জোনাল অফিসের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। ফলে তাদের সিমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিল পরিশোধের জন্য তাদের আগৈলঝাড়া অফিসে যাতায়াতে পুরো একদিন কেটে যায়। এছাড়া বিদ্যুতের কোন সমস্যা হলে আগৈলঝাড়া অফিসে খবর দেয়া সত্বেও তারা ৩/৪দিন পর ঘটনাস্থলে আসেন। ফলে তাদের গ্রামের বিদ্যুত গ্রাহকেরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। তারা আগৈলঝাড়া ব্যতিরেখে তাদের গৌরনদী জোনাল অফিসের আওতাভুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উল্লেখিত অভিযোগ অস্বীকার করে আগৈলঝাড়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রঙ্গলাল কর্মকার বলেন, কোন কোন লাইনম্যান আমার নাম ভাঙ্গিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতে পারে। তবে এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ সুনিদৃষ্ঠ কোন অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।