গৌরনদী পৌর সদরের দক্ষিন পালরদীতে চাঁদার দাবিতে ইমামকে অমানুষিক নির্যাতন ও এক এসআই লাঞ্চিত

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ দাবিকৃত চাঁদার পুরো টাকা না দেয়ার জেরধরে মসজিদের এক ইমামকে আটক করে অমানুষিক নির্যাতনের পর সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও টিপসই নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে দশ বছরের এক শিশু কন্যাকে দিয়ে শ্লীলতাহানীর নাটক সাজিয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশের তদন্তে ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসে। একপর্যায়ে পুলিশ সাদা ষ্ট্যাম্প ও বৃদ্ধকে উদ্ধার করার চেষ্টা কালে চাঁদাবাজ ও তাদের সহযোগীদের হাতে এক এসআই লাঞ্চিত হয়। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে বরিশালের গৌরনদী পৌর সদরের দক্ষিন পালরদী মহল্লায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার পশ্চিম রমজানপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ঢাকার সাভার বাজার জামে মসজিদের ইমাম আলহাজ্ব আব্দুস ছালাম হাওলাদার ১২ বছর পূর্বে দক্ষিন পালরদী মহল্লার খোরশেদ আলম মৃধার কাছ থেকে ২১ শতক জমি ক্রয় করেন। জমি ক্রয়ের পর ছালাম ওই জমিতে ঘর তুলে ভাড়া দেন। উক্ত জমি নিয়ে পার্শ্ববর্তী বাদশা প্যাদা গংদের সাথে বিরোধ চলে আসছে। আলহাজ্ব আব্দুস ছালাম হাওলাদার অভিযোগ করেন, পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য নুর আলম সিকদার গত ১২ জুন তার কাছে চাঁদা হিসেবে দু’লক্ষ টাকা ও ২ শতক জমি দাবি করেন। দাবিকৃত টাকার মধ্যে ইতোমধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার দিকে ছালাম দক্ষিন পালরদী মহল্লার তার বাড়িতে ভাড়া নিতে আসেন। এ সময় নুর আলম সিকদার চাঁদার বাকি টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে তাদের উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে ছালামকে ধরে নিয়ে পাশ্ববর্তী আজিজুল হকের বসত ঘরে আটক করে অমানুষিক নির্যাতনের পর জোরপূর্বক ১৫০ টাকার সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও টিপসই নেয়া হয়। পরবর্তীতে দশ বছরের এক শিশু কন্যাকে দিয়ে শ্লীলতাহানীর নাটক সাজিয়ে পুলিশকে খবর দেয়া হয়েছে। গৌরনদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল হোসেন ঘটনাস্থলে তদন্তকালে মূল রহস্য বেরিয়ে আসে।

এস.আই আবুল হোসেন জানান, সাদা ষ্ট্যাম্প ও বৃদ্ধ ছালামকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলে স্থানীয় নাজমা বেগমসহ কতিপয় উশৃংখল মহিলারা তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। রাত সাড়ে ৭ টার দিকে ষ্ট্যাম্পের আংশিক ও বৃদ্ধ ছালামসহ অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে আসা হয়। অভিযোগ অস্বীকার করে পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য নুর আলম সিকদার বলেন, ছালামকে মেয়েলী ঘটনায় স্থানীয়রা আটক করেছে। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে অযথা ঝামেলায় জড়িয়েছি। গৌরনদী থানার এসআই গাজী শামীমুল হক বলেন, পৌর কাউন্সিলর যে ঘটনা ঘটিয়েছে তাতে তার বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হওয়া উচিত। গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আবুল কালাম বলেন, উভয় পক্ষ মঙ্গলবার গভীর রাতে মীমাংসার জন্য মুচলেকা দেয়ায় এখনো কোন মামলা হয়নি।