নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের বাবুগঞ্জের মীরগঞ্জ বাজার সংলগ্নস্থানে রাক্ষুসি আড়িয়াল খাঁ নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে শুক্রবার ভোরে আকস্মিক ভাবে চারটি বসত ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ভাঙ্গন রোধের এক হাজার প্লেসিসি ব্লক নদীতে ডেবে গেছে। এখনও ১৫টি দোকান ও ছয়টি বসত ঘর হুমকির মুখে রয়েছে। গ্রাস করে নেয়া ঘরের সাথে নদীতে ডুবে আনোয়ার হোসেন নামের এক যুবক নিখোঁজ ও কমপক্ষে ১০জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহতদের মুর্মুর্ষ অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাবুগঞ্জ উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙ্গন ভয়াবহ রুপ ধারন করায় গতকাল শুক্রবার ভোরে আড়িয়াল খাঁ নদীর মীরগঞ্জ বাজার সংলগ্ন কাজী ফারুক হোসেনের একটি, কাজী বাবুলের একটি ও সামসুল হক কাজীর দুটি বসত ঘর, ভাঙ্গন রোধের একহাজার পে¬-সিসি ব্ল¬কেরস্থানে বড় ধরনের ফাটল দেখা দেয়। ফাটল দেখা দেয়ার পর বাড়ির মালিকেরা স্থানীয় লোকজনদের ডেকে এনে ঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সময় হঠাৎ করে বসতঘরসহ বাড়ির মালিকসহ স্থানীয় ১১জন গ্রামবাসি বাড়ি ঘর ধ্বসে নদীর গর্ভে তলিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে ট্রলার নিয়ে নিখোঁজদের উদ্ধার কাজ শুরু করে। একপর্যায়ে স্থানীয়রা অজ্ঞান অবস্থায় দু’জন, হাত-পা কাটা অবস্থায় আটজনকে উদ্ধার করলেও আনোয়ার হোসেন নামের এক যুবক নিখোঁজ হয়। নিখোঁজ যুবকের সন্ধ্যান এখনও পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা মুর্মুর্ষ অবস্থায় আলতাব হোসেন (৫০), সোনা মিয়াকে (২৪) বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। অপর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে মীরগঞ্জ বাজারে ১৫টি দোকান ও পাশে থাকা ৪/৫টি বসত বাড়ি এখনও হুমকির মুখে রয়েছে। নদী ভাঙ্গনে হুমকির মুখে থাকা বসতঘর বাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার মাসুদ করিম লাভু জানান, তিনি ভাঙ্গন রোধে সিসি ব্ল¬ক তৈরী করে নদীতে ফালানোর জন্য স্তুপ করে রেখে ছিলেন। গতকাল শুক্রবার ভোরে তার স্তুপ করে রাখা একহাজার সিসি ব্ল¬ক নদীতে ডেবে গেছে। এতে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে আড়িয়াল খাঁঁ নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনের খবর পেয়ে গতকাল শুক্রবার বাবুগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান সুলতান আহম্মেদ খান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেগম মোর্শেদা আক্তার, বাবুগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি জিয়াউল আহসান, উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক সরদার খালেদ হোসেন স্বপন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান মিলন, রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের নেতা-কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
মানববন্ধন
কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে বরিশালে মানববন্ধন করেছে কীর্তনখোলা নদীভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটি। গতকাল শুক্রবার সকাল দশটায় বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়কে (সদর রোডে) মানববন্ধন চলাকালীন সময় অনুষ্ঠিত সভায় সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জিয়াউল ইসলাম সাবু, মজিবুল হক প্রমুখ। বক্তারা নগরীর বেলতলা খেয়াঘাট থেকে লামছড়ি হাজীবাড়ি খেয়াঘাট পর্যন্ত ভাঙ্গন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।