দ্রুত পেটের মেদ কমানোর পরামর্শ

ডাঃ ওসমান গনি ॥ পেটের মেদ সাধারনত শরীরের অন্য কোন অংশের মেদের চেয়ে একটু আলাদা। শরীরের  অন্য অংশের মেদ সাধারণত চামড়ার নিচে জমে থাকে। তবে পেটের মেদ লিভার, কিডনি ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের সাথে লেগে জমে থাকে, যা অনেক সময় প্রানঘাতি হয়ে দেখা দিতে পারে। পেটের মেদ এর সাথে হার্টের সমস্যা থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস ও অন্যান্য সমস্যার জোরালো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়।

আমরা অনেকেই পেটের মেদ কমানোর জন্য বেলি স্ট্রোক অর্থাৎ পেটের মাংশ পেশীর  ব্যায়াম করে থাকি। এর ফলে পেটের মাংশ পেশীর টোন বা আকৃতি সুন্দর হলেও পেটের মেদ কমাতে তা খুব একটা কাজে দেয় না। পেটের মেদ কমাতে হলে প্রয়োজন পুরো শারীরিক ব্যায়াম।

মনে রাখবেন, ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট হালকা জগিং বা জোরে হাটার পর রক্তে চলমান ফ্যাট শেষ হয়ে দেহে সঞ্চিত ফ্যাট ভাঙতে থাকে। তাই এই ৪০ বা ৪৫ মিনিটের পর আপনি যদি ১০ বা ১৫ মিনিট ও জগিং বা জোরে হাঁটতে পারেন, তাহলেই প্রতিদিন একটু একটু করে আপনার জমান চর্বি কমতে থাকবে।

মনে রাখা প্রয়োজন, প্রথম দিন ই ৪০-৪৫ মিনিট জগিং শুরু করবেন না। এর ফলে আপনার শরীরে ব্যথা হতে পারে, ফলে আপনি পরবর্তীতে ব্যায়াম করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। তাই প্রথম দিন ১০ মিনিট, পরের দিন ২০ মিনিট এভাবে সময় বাড়ান এবং ১ ঘণ্টাতে স্থির  থাকুন। মনে রাখবেন, অতি দ্রুত ওজন কমানো গেলেও এতে হিতে বিপরিত হতে পারে। ওজন কমানোর মুল মন্ত্র হল মটিভেসন ও একাগ্রতা।

এখন বলে রাখি, শুধু ব্যায়াম করলেই অনেক সময় মেদ কমে না, এর জন্য আপনাকে খাবার গ্রহণে সতর্ক হতে হবে। খাবারে প্রচুর পরিমানে আঁশ জাতীয় খাদ্য যেমন শাক সবজি রাখুন। চর্বি জাতিয় খাবার কম খান। ফাস্ট ফুড খাওয়া বন্ধ করতে হবে।

এতোক্ষণ জানলেন জমানো চর্বি কমানোর কথা। এবার জেনে নিন, যাদের পেটে তেমন মেদ নেই তবে ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছে তারা কী করবেন? সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি রাতে ঘুমাতে যাবার আগে যদি একজন ব্যক্তি মাত্র ১০ মিনিট আস্তে আস্তে হাঁটেন, তবে তার দেহে যে হরমন ও আঞ্জায়েম নিস্রিত হয়, তাতে সারা দিনে খাবারের সাথে গ্রহণ করা সমস্ত অতিরিক্ত চর্বি রক্ত থেকে পরিস্রুত হয়ে যায় এবং দেহে জমতে পারে না। কেবল এই ১০ মিনিট হাঁটার কারণে যে পরিমাণ চর্বি জমতে বাধা পায়, তা যদি আমরা ব্যায়াম এর মাধ্যমে কমাতে চাইতাম, তার জন্য আমাদের ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা এক নাগারে জোরে দৌঁড়াতে হত।

তাই নিয়ম মেনে পরিমিত ব্যায়াম করে গেলে ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলে পেটের মেদই শুধু নয়, সারা দেহের মেদ এই কমিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফিগার পেতে পারি।

ডাঃ ওসমান গনি
বি, পি, টি (ডি, ইউ); এম, এস, সি (নিউরো রিহ্যাব, ব্রিটেন)
ডিপ্লোমা, অর্থপেডিক মেডিসিন (বেলজিয়াম)
নিউরো রিহ্যাব ও পেইন স্পেশালিষ্ট ফিজিওথেরাপিস্ট।
pt_osmangony@yahoo.com