হ্যালো প্রধানমন্ত্রী…

মোবাইল টেলিফোন বেজে উঠল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন ধরলেন। ওই প্রান্ত থেকে কেউ একজন জানতে চাইলেন- প্রধানমন্ত্রীই কথা বলছেন কিনা? শেখ হাসিনা জবাব দিলেন- ‘হ্যাঁ আমিই বলছি।’

Shaikh Hasinaসঙ্গে সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিল অপরপ্রান্ত।

শেখ হাসিনা ওই নম্বরে ফিরতি ফোন করে জানতে চাইলেন কে কথা বলছেন। তখন অপর প্রান্ত থেকে উত্তর এলো- তিনি বিশ্বাসই করতে পারেননি যে, বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলছেন। তাই নার্ভাস হয়ে নিজেই লাইন কেটে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার পর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ফেরার পর এ দৃশ্যের অবতারণা হয়।

বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটার পর থেকে প্রায় রাত ১১টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার জুমার নামাজের পর অনেকের সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী তার মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন তার বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল।

প্রধানমন্ত্রী বুধবার সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তার দুটি মোবাইল ফোনের নম্বর এবং ই-মেইল ঠিকানা নাগরিকদের জন্য প্রকাশ করে বলেন, তার পরিবারের সদস্যদের নাম ভাঙিয়ে কেউ কমিশন চাইলে বা অবৈধ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে জানাতে।

সেল নম্বর হল, +৮৮ ০১৭১১৫২০০০০ এবং +৮৮ ০১৮১৯২৬০৩৭১। ই-মেইল: sheikhhasina@hotmail.com.

শেখ হাসিনা সংসদে বলেন, “আমি, আমার ছোট বোন এবং আমাদের পাঁচ ছেলে-মেয়ে ছাড়া আমার আর কোনো পরিবার নেই। এর বাইরে আমার কেউ নেই।”

মাহবুবুল হক শাকিল জানান, অধিকাংশ ফোনই এসেছে পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের জন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়ে। অনেকে আবার শবে বরাতের রাতে ফোন করে প্রধানমন্ত্রীর দোয়া চান। শাকিল বলেন, “একজন ফোন করে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমার বিশ্বাসই হয়নি-আপনি ফোন ধরবেন’। “একজন আবার ফোন করে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি কী সত্যিই শেখ হাসিনা বলছেন’?’”

এছাড়াও অনেক ই-মেইলও পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে আছেন জাতীয় পার্টির নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ। পদ্মা সেতু থেকে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ প্রত্যাহারের ঘোষণা এবং এনিয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান নিয়েও অনেকে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে নিজেদের কথা বলেছেন।

শাকিল বলেন, “একজন ফোন করে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি মাথা নিচু করেন নাই- এটাই আমাদের গর্ব। দরকার হলে আমরা নিজেরা টাকা তুলে এই সেতু করব’।

“দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ফোন করে এক ব্যক্তি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পদ্মা সেতু হবেই। যত ষড়যন্ত্র হোক না কেনো- আপনিই পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করবেন, আপনিই শেষ করবেন’।”

কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে একজন ফোন করে প্রধানমন্ত্রীকে পদ্মা সেতুর বিষয়ে তার নীতিতে অটল থাকার অনুরোধ করেন। দুর্নীতির তথ্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী তার মোবাইল ফোন নম্বর দু’টি প্রকাশ করলেও অনেকেই ফোন করেন ব্যক্তিগত এবং নিজ এলাকার সমস্যা নিয়ে।

সুনামগঞ্জ থেকে একজন ফোন করেন তার গ্রামের সমস্যা প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে। মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক নারী কর্মচারী তার চাকরী রাজস্ব খাতে নেওয়ার অনুরোধ করেন। বানারী পাড়া থেকে এক ব্যক্তি ফোন করে চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে তাদের ওপর নির্যাতনের কথা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার চান।

সংবাদটি বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম এর সৌজন্যে