উত্তর সরিকলে যৌতুকের দাবিতে দগ্ধ শিমু হত্যা মামলার স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে আসামিদের পাল্টা মামলা

গৌরনদী সংবাদদাতা ॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর সরিকল গ্রামে যৌতুকের দাবিতে পাষন্ড স্বামী ও তার পরিবারের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিল গৃহবধু ও এক সন্তানের জননী শামিমা নাসরিন শিমু (২৪)। স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের অব্যাহত নির্যাতন সইতে না পেরে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দীর্ঘ নয় দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ২৪ এপ্রিল হতভাগ্য শিমু মৃত্যুর কাছে পরাস্থ হয়। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধুর ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বিপ্লব ২৫ এপ্রিল বাদি হয়ে গৌরনদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয় নিহতের স্বামী কিসলু বিশ্বাস, শ্বশুর সামসু বিশ্বাস, দেবর লোকমান বিশ্বাস ও তার স্ত্রী নুপুর বেগমকে। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও রহস্যজনক কারনে মামলা দায়েরের প্রায় তিন মাস অতিক্রম হওয়ার পরেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করেননি।

অপরদিকে স্বাক্ষীদের জব্দ করতে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ও নিহতের শশুর সামসু বিশ্বাস বাদি হয়ে শিমুকে চরিত্রহীনা দাবি করে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাল্টা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে শিমু হত্যা মামলার স্বাক্ষী ও নিহতের ফুফাত ভাই নাজমুল আলম ওরফে চঞ্চল, বশার মিয়া ও লিটন মিয়াকে। বিচারক গৌরনদী থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করার নিদের্শ দেন। আদালতের নির্দেশে পুলিশ গত সোমবার রাতে গৌরনদী থানায় মামলাটি রুজু করেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামের মৃত একেএম গিয়াস উদ্দিন খানের কন্যা শামিমা নাসরিন শিমুর সাথে পাশ্ববর্তী উত্তর সরিকল গ্রামের সামসু বিশ্বাসের পুত্র কিসলু বিশ্বাসের সাথে ১০ বছর পূর্বে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। দাস্পত্য জীবনে তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে বর পক্ষের দাবিকৃত নগদ ৬০ হাজার টাকাসহ প্রায় দু’লক্ষাধিক  টাকার মালামাল দেয়া হয়। গত দু’বছর পূর্বে যৌতুকলোভী কিসলু ও তার পরিবারের লোকজন ব্যবসার জন্য পূর্ণরায় দু’লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে।

উত্তর সরিকলে যৌতুকের দাবিতে দগ্ধ শিমু হত্যা মামলার স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে আসামিদের পাল্টা মামলা