এক মাসের বেতন দিবেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারীরা – মুক্তিযোদ্ধারা দিবেন এক মাসের ভাতা

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মানের সাহসী ঘোষনা দেয়ার স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতী দিয়েছেন বরিশালের রণাঙ্গন কাঁপানো ৫১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এছাড়া নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সারাদিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীগন তাদের এক মাসের বেতন পদ্মা সেতু তহবিলে সমর্পন করার ঘোষনা দিয়েছেন।

বুধবার এক বিবৃতীতে গৌরনদী উপজেলার ৫১ জন মুক্তিযোদ্ধারা উল্লেখ করেন, “আমরা বাঙ্গালী বীরের জাতি, যেখানে বাঁধা এসেছে সেখানেই আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এবার আরো একটি বার ঘুরে দাঁড়াবার সময় এসেছে। ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ-দেখিয়ে দাও বিশ্বকে আমরাও পারি”। ১৯৭১ সনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে শত্র“ মুক্ত করার জন্য যেভাবে সকল বাঙ্গালীকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান করেছিলেন। তেমনি স্বাধীনতার ৪১ বছর পর পিতার ন্যায় আজ সাহসী ঘোষনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিবৃতীতে মুক্তিযোদ্ধারা আরো উল্লেখ করেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা একদিন বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারাদিয়ে নিজেদের জীবন বাঁজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরেছিলাম। তেমনি আজ সেই বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনা “আর ভিক্ষা নয়-নিজের পায়ে দাঁড়াব। দেশের অর্থেই পদ্মা সেতুর নির্মান কাজ শুরু করা হবে”। এ মহামূল্যবান ও পিতার ন্যায় সাহসী ঘোষনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা একমাসের সম্মানি ভাতা নেয়া থেকে বিরত থাকবো। এই এক মাসের ভাতা আমরা নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মানে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা বাস্তবায়নের জন্য উৎস্বর্গ করে দেব। একইসাথে দেশের সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের পদ্মা সেতু নির্মানে প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগীতা করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা অনুরোধ করেন। বিবৃতী প্রদানকারী মুক্তিযোদ্ধারা প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষনাকে ঐতিহাসিক ঘোষনা দাবি করে তার এ ঘোষনার প্রতি অবিচল থাকার জন্যও অনুরোধ করেন। সাথে সাথে স্বাধীনতা বিরোধী বিশ্ব ব্যাংক ও এ দেশীয় তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নামে মিথ্যাচারের কুৎসা রটানোর অভিযোগে আন্তজার্তিক আদালতে মামলা দায়ের করার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রীর কাছেও দাবি করা হয়।

বিবৃতী প্রদানকারীরা হলেন-যুদ্ধচলাকালীন সময়ে এতদাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক, রণাঙ্গন কাঁপানো যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বুলেট ছিন্টু, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আব্দুর রব, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মোঃ আনোয়ার হোসেন, মনিরুল ইসলাম, আব্দুল হক ঘরামী, আব্দুর রাজ্জাক চোকদার, অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট গোলাম মোস্তফা, আলহাজ্ব মোঃ খান সামচুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা কালিয়া দমন গুহ, মহসিন সরদার, মোঃ সাহানুর বেপারী, সুরাত আলী সরদার প্রমুখ।

অপরদিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-অর-রশীদ খান জানান, এক যৌথ সভার মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সারাদিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীগন তাদের এক মাসের বেতন পদ্মা সেতু তহবিলে সমর্পন করবেন।  তিনি আরো জানান, স্বাধীনচেতা বাঙালী কখনো অন্যায়ের কাছে নিজেকে সমর্পন করেনি। নিজস্ব শক্তিতে অখন্ড মনোবলেবলীয়ান হয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সনে বীর বাঙালী যেমন করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারন করে বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অর্থেই পদ্মা সেতু নির্মান করা হবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মোঃ মুহসিন উদ্দিন, প্রভাষক তানভীর কায়সার, শফিউল আলম, ইশিতা আহমেদ, অহিদুর রহমান, সেকশন অফিসার বাহউদ্দিন গোলাপ, খান সামদিয়া সুলতানা, উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবু মোঃ বষির, মোঃ মনিরুজ্জামান, হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।