সচল করার উদ্যোগ নেই – বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটের ষ্টিমার সার্ভিস একবছর ধরে বন্ধ

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশাল থেকে চট্টগ্রামের সাথে সরাসরি নৌ-যোগাযোগ ষ্টিমার সার্ভিস গত এক বছরের অধিক সময় ধরে বন্ধ থাকায় এ রুটের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বরিশালবাসীকে চট্টগ্রাম আসা-যাওয়া করতে নানা ঝক্কি ঝামেলার পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় ও সময় অপচয় করতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এ লাভজনক রুটে ষ্টিমার চলাচল বন্ধ থাকলেও রুটটি চালু করতে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। ২০১১ সনের জুন মাসে যান্ত্রিকত্র“টির অযুহাত দেখিয়ে এ রুটে ষ্টিমার চলাচল বন্ধ করে দেয় হয়।

বিআইডব্লিউটিসি’র বরিশাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটে উপকূলীয় সার্ভিস নামে কয়েক যুগ পূর্বে ষ্টিমার সার্ভিস চালু করে লাভজনক অবস্থানে গিয়ে দাঁড়ায়। বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটে প্রথমে এমভি মনিরুল হক ও এমভি আব্দুল মতিন নামের দুটি ষ্টিমার প্রতি বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসতো এবং শুক্রবার বরিশাল থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেতো। বরিশাল থেকে যাত্রী পরিবহনের চেয়ে এ জাহাজে করে শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল ও চট্টগ্রাম থেকে পুরাতন স্টিলের পাত ও রশি পরিবহন করা হত। পরবর্তীতে এক এক করে এমভি মনিরুল হক ও এমভি আব্দুল মতিন নামের ষ্টিমার দুটি এ রুট থেকে নিয়ে চট্টগ্রাম-স্বনদ্বীপ-হাতিয়া রুটে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তার স্থলে বরিশাল- চট্টগ্রাম রুটে দেয়া হয় এমভি বারো আউলিয়া নামের অপর একটি ষ্টিমার। বছর ঘুরতেই বারো আউলিয়া নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রামের ডকইয়র্ডে। সূত্রে আরো জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল আসতে একটি ষ্টিমারের তৈলসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে একবার আসতে খরচ হতো প্রায় দুই লক্ষ টাকা। ওইসময় ষ্টিমারে আয় হতো আড়াই থেকে ৩ লক্ষ টাকা।

বিআইডব্লি¬উটিসি’র বরিশালের উপ-পরিচালক গোপাল চন্দ্র মজুমদার বলেন, বরিশাল থেকে চট্টগ্রামে যেতে প্রথম শ্রেনীর ডাবল কেবিন (বাথসহ) ভাড়া নেয়া হতো ৩৩ ’শ ৯০ টাকা, বাথ ছাড়া ২৩’শ ৮০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেনীর ১৩’শ ২০ টাকা, ফ্যামিলি কেবিন ৪ হাজার ৬৫ টাকা। তাছাড়া সাধারন ডেকে (সুলভ) ১৯০ টাকা করে নেয়া হতো। এ রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা জানান, বিশেষ করে পর্যটকরাই এ রুটে বেশি যাতায়াত করতো। তারা আরো জানান, কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা এ রুটে যাত্রী সংকট দেখিয়ে রুটটি বন্ধ করে দিয়েছে ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জুন মাসে এ রুটের সর্বশেষ ষ্টিমার বারো আউলিয়া’র যান্ত্রিকত্র“টি দেখা দেয় বর্তমানে বারো আউলিয়া চট্টগ্রামের সরকারি ডকইয়র্ডে রয়েছে। বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন স্বার্থ সংরক্ষন কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ মিজানুর রহমান বলেন, কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এ রুটে দীর্ঘদিন ধরে ষ্টিমার চলাচল বন্ধ থাকলেও বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। তিনি জরুরি ভিত্তিতে পূর্ণরায় বরিশাল-চট্টগ্রামের রুটটিতে ষ্টিমার সার্ভিস চালু করার প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।