গৌরনদীর দধি-মিষ্টির ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন সচিন ঘোষ

সূত্র মতে, প্রায় দু’বছর পুর্বে ডাওরী ঘোষ নামের এক ঘোষ গৌরনদীতে তৈরী করেছিলেন এ লোভনীয় খাবার। পর্যায়ক্রমে গৌরনদীর ঐতিহ্যবাহী ভোজ্যপন্যের ধারা ধরে রাখার মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন শচিন ঘোষ। এরপূর্বে গৌরনদীর ঐতিহ্যবাহী ভোজ্যপণ্যের ধারা ধরে রেখেছিলেন গেদু ঘোষ, সচিন ঘোষ, জীবন ঘোষ, ঝন্টু ঘোষ ও দিলীপ ঘোষ। তারা ঐতিহ্যবাহী দধি, মিষ্টি, ঘি তৈরী করে সারাদেশে সরবারাহ করে সুনাম কুড়িয়েছিলেন। পরে তাদের পাশাপাশি কিছু মুসলিম ব্যবসায়ী ঘোষ কারিগরের সহয়তায় এ ব্যবসা শুরু করে সুনাম ধরে রাখেন। সারাদেশে গৌরনদীর দধি, মিষ্টি, ঘি’র যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বিবাহ অনুষ্ঠান, বৌ-ভাত, জন্মদিন, মৃত্যুবার্ষিকীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং বিভিন্ন তদবিরে দধির জন্য দুর-দুরান্ত থেকে লোকজন আসেন গৌরনদীতে। প্রতিদিন শত শত মন দধি, মিষ্টি এখান থেকে ঢাকা-বরিশাল, চট্রগ্রাম, খুলনা, দিনাজপুর, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে চালান দেওয়া হয়। দেশের বাইরে ও ব্যাপকভাবে গৌরনদীর দধি, মিষ্টি, ঘি’র সুনাম রয়েছে। গৌরনদীর দধির প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ১০/১৫ দিনেও স্বাভাবিক আবহাওয়ায় নষ্ট হওয়ায় সম্ভাবনা নেই। যে কোন যানবাহনে সহজে বহন করা যায়। শুকনো মিষ্টি ১ মাসেও নষ্ট হয় না। ঘি ১ বছরেও নষ্ট হয় না।
সচিন ঘোষ জানান, তিনি ১২০ প্রকারের লোভনীয় মিষ্টি তৈরী করতে পারেন। তবে বর্তমানে ১৫ প্রকারের মিষ্টান্ন দ্রব্য তৈরী করেন। এরমধ্যে দধি, চমচম, কালোজাম, শুকনো মিষ্টি, লাদেন মিষ্টি (বড় রসগোল্লা) রসমালাই, ছানার সন্দেশ, ক্ষীরপুরি, মাওয়া, ছানার জিলাপি উল্লেখযোগ্য। তিনি আরো জানান, ১৯৯০ সালে তার দোকানের কারিগর রনো ঘোষ ডিবি লটারী মাধ্যমে আমেরিকা গমন করে। সেখানে সে (রনো ঘোষ) গৌরনদী মিষ্টান্ন ভান্ডার নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। তার দোকান থেকে শুধু আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশীরাই নয়। খোঁদ আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের কাছে সে (রনো ঘোষ) দধি-মিষ্টি বিক্রি করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।    
গৌরনদীর ঘোষেরা জানান, ১৯৭৪ সালে ঘোষদের জন্য রেশম পদ্ধতি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর থেকে সরকারি কিংবা বেসরকারি ভাবে সহযোগিতা পাচ্ছেন না গৌরনদীর দধি, মিষ্টি প্রস্তুতকারীরা। ব্যবসায়ীরা চড়া দামে দুধ ক্রয় করে ঘর ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর, লাকরি খরিদ, কর্মচারিদের বেতন, টালীসহ বিভিন্ন দ্রব্য ক্রয় করে তাদের ব্যবসায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পরেছে। ব্যবসায়ীরা আরো জানান, গৌরনদীর ঐতিহ্যবাহী দধি, মিষ্টি, ঘি’র ঐতিহ্য ধরে রেখে ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ বিতরন, দুধের বাজার, ডেইরী ফার্ম স্থাপন এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। আর এ জন্য তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।