নামেই মাত্র প্রথম শ্রেনীর গৌরনদী পৌরসভা – বিভিন্ন সড়কের বেহাল দশা – যান ও জনচলাচলে দুর্ভোগ

গৌরনদী ডটকম ॥ বরিশালের গৌরনদী পৌরসভা প্রথম শ্রেনীতে উর্ত্তীন হলেও পৌরবাসী তাদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। পৌর এলাকার রাস্তা ঘাট দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্ন এলাকার জনগুরুতপূর্ণ সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে যান ও জনচলাচলে অনুপযোগী হয়ে পরেছে। এছাড়া পৌর এলাকার অধিকাংশ স্কুলের সম্মুখে একটু বৃষ্টিতেই হাঁটু পানি জমে যায়। ওই পানির মধ্যদিয়েই স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করায় বিভিন্ন পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ বিষয়গুলো দেখার যেন কেউ নেই।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের সদর উত্তরের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়ীক কেন্দ্র  গৌরনদী পৌরসভার টরকী বন্দরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো খানাখন্দে পরিনত হয়েছে। টরকী বন্দরের প্রবেশদ্বার টরকী বাসষ্ট্যান্ড থেকে টরকী বন্দর পোস্ট অফিস পর্যন্ত আধা কিলোমিটার সড়ক, নীলখোলা থেকে টরকী বন্দর আদর্শ জামে মসজিদ পর্যন্ত আধা কিলোমিটার সড়ক, টরকীরচর বড় ব্রিজ থেকে টরকী বন্দর ছাগল হাট পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক তিনটির বিভিন্নস্থানের বিটুমিন, পাথর ও খোয়া উঠে গেছে। সড়কের কোন কোনস্থানে ছোট বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওইসব সড়কে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই ছোট-বড় দূর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে।

এছাড়া বন্দরের রায়পট্টি, গুড়পট্টি, মাঝিপট্টি, কাপড় ও মাছের টল ঘরের পাশের সড়কের বিভিন্নস্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমে ভুক্তভোগী ও বন্দরে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসব সড়কে রিকশা-ভ্যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অপর দিকে গৌরনদী বন্দরে চালপট্টি, ঘোষপট্টি ও নদীরপাড়ের সড়কের বিভিন্নস্থানের সড়কের বেহাল দশা।

টরকী বন্দরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখর দত্ত বণিক, গোলাম মোস্তফা, সৌলেন্দ্র নাথ হাওলাদারসহ একাধিক ব্যবসায়ী ক্ষোভের সাথে জানান, এ বন্দর থেকে প্রতিবছর পৌর কর্তৃপক্ষ লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করলেও দীর্ঘদিনেও বন্দর উন্নয়ন তথা বন্দরের রাস্তাঘাট মেরামত কিংবা সংস্কার করা হয়নি। বন্দরের মসজিদ মার্কেটের খান গার্মেন্সের মালিক নুর হোসেন জানান, টরকী বন্দরের প্রবেশের রাস্তাসহ বিভিন্ন রাস্তা চলাচলে অনুপযোগী হওয়ায় ক্রেতারা বন্দরে আসছেননা। ফলে এবছর ঈদের কেনা কাটায় ভাটা পড়েছে।

অপরদিকে পৌরসভার প্রানকেন্দ্র টিকাসার থেকে গেরাকুলের রাস্তা, আশোকাঠী ফিলিং ষ্টেশন থেকে গেরাকুল ভায়া হ্যালিপাডের মানিক মিয়া সড়ক, বাদামতলা থেকে গোবর্দ্ধন রাস্তা, আশোকাঠী বাসষ্ট্যান্ড থেকে মোল্লাবাড়ি পর্যন্ত রাস্তা, নোমোবাড়ি থেকে উত্তর পালরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা, আশোকাঠী থেকে উপজেলা পরিষদের খালপাড়ের রাস্তা, দক্ষিন পালরদী গয়নাঘাটা ব্রিজ থেকে গৌরনদী বন্দর কাঁচা বাজার পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্নস্থানে ভাঙ্গা ও গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে যান ও জনচলাচলে চরম ভোগান্তি বেড়ে গেছে। এসব রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত অধিক ঝুঁকি নিয়ে রিকশা-ভ্যান যাতায়াত করছে। সবগুলো রাস্তা বেহাল অবস্থায় থাকায় চলাচলে পৌরবাসীর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খোঁদ পৌর মেয়রের নিজ আট নং ওয়ার্ডের গেরাকুল মহল্লার অধিকাংশ গুরুতপূর্ণ রাস্তাসহ গেরাকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখে একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান পানি জমে যায়। ওই পানির মধ্য দিয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। ফলে স্কুলের শিক্ষার্থীরা পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

ব্যবসায়ী ও পৌর নাগরিকদের ক্ষোভের কথা স্বীকার করে গৌরনদী পৌরসভার মেয়র মোঃ হারিছুর রহমান হারিছ জানান, পৌরসভার উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলেই খানাখন্দ সড়ক, রাস্তার সংস্কারসহ অন্যান্যসব সমস্যার সমাধান করা হবে। তবে কবে নাগাদ সেই বরাদ্দ আসবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না।

নামেই মাত্র প্রথম শ্রেনীর গৌরনদী পৌরসভা - বিভিন্ন সড়কের বেহাল দশা - যান ও জনচলাচলে দুর্ভোগ