সরকারি দলের তান্ডব – ঘটনার ৮দিন পরে ও হাসপাতাল ভাংচুরের ঘটনায় কোন মামলা হয়নি

গৌরনদ প্রতিনিধি ॥ সরকারি দলের ক্যাডারদের হামলায় গৌরনদী হাসপাতাল ভাংচুরের গটনায় ৮ দিন পরে ও কোন মামলা হয়নি। একটি সুত্র জানায়, হামলাকাররা এক প্রভাবশালী নেতার সহযোগী হওয়ার কারণে এ ব্যাপারে এখনো কোন মামলা হয়নি। গৌরনদী হাসপাতালের দায়িত্বে নিয়োজিত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ একে এম সামসুদ্দীনের সাথে এ ব্যপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি বরিশাল সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে, তবে  কোন মামলা বা জিডি হয়নি।

উল্লেখ্য,গত ২৩ আগষ্ট রাতে উপজেলার দিয়াশুর গ্রামে ২ কিশোরিকে উত্যাক্ত করার জের ধরে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য রব আকন ও প্রতিবেশী জহুর আলী খান গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। জানাগেছে, ঘটনার সময় এস আই খলিল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেননা। তার আহত স্বজনরা গৌরনদী হাসপাতালে চিকিৎস্যা নিতে গেলে যুবলীগ নেতা টুকু মল্লিক ও আলামিনের নেতৃত্ব গৌরনদী হাসপাতালে দফায় দফায় তান্ডব চালায়। এ সময় পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করে। হামলাকারীরা পুলিশ কর্মকর্তা খলিলের বড় দুই ভাই ,পুত্র ও ভাইপোদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতরভাবে আহত করে। এসময় হামলাকারিরা জরুরী বিভাগসহ ডাক্তারদের ৫টি কক্ষ ভাংচুর করে।  আহত সাবেক সেনা সদস্য আঃ রব আকন অভিযোগ করেন, ওসি  হামলাকারিদের বিরূদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। তিনি তড়িঘড়ি করে প্রতিপক্ষ জহুর খানের পক্ষ থেকে  একটি মামলা গ্রহন করেন। ওই মামলায় আমার নিদোর্ষ ছোটভাই খুলনা কোতোয়ালী থানার এস আই মোঃ খলিলুর রহমান আকন,  কনেষ্টবল আঃ রশিদ আকন, ভ্রাতুষ্পুত্র প্ত্রু মোফাজ্জেল আকন,আমার পুত্র তোতা আকন, টিপু আকন ও আমাকে আহত অবস্থায় গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করেন। আমাদের চিকিৎসার সুযোগ পর্যন্ত তিনি দেননি। একাধিক সূত্র জানায়, গৌরনদীর পৌর মেয়র হারিচুর রহমানকে তুষ্ট করতে গিয়ে পুলিশের উর্ধŸতন কর্তৃপক্ষের অনুমোতি ছাড়াই এসআই মোঃ খরিলুর রহমান সম্পূর্ন নির্দোষ হওয়া সত্যেও তাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছেন গৌরনদী থানার ওসি আবুল কালাম। এ ঘটনায় গৌরনদীর থানা, হাইওয়ে থানা ১টি তদন্ত কেন্দ্র ও ২টি ক্যাম্পে কর্মরত পুলিশ সদস্যসহ এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের হুমকিতে গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের সদস্যরা এখন নিরাপত্তাহীনতায ভুগছে। সোমবার বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট তছলিম আরিফ গ্রেফতারকৃত ৫ আসামী সহ ৯ আসামীর জামিন মনজুর করলে ও এস আই খলিলের জামিন না মনজুর করেন।

পুলিশ অফিসার খলিলের ভাগ্নি উত্তর বিজয়পুর গ্রামের রোকসনা (৩৮) জানান, তার মামা খলিল আকন ঘটনার দিন বৃহষ্পতিবার সন্ধা সাড়ে ছয়টার দিকে তাদের বাড়ীতে বেড়াতে আসেন। রাত ৯ টার দিকে রাতের খাবার খেযে আমাদের বাসায় রাত্রি যাপনের জন্য ঘুমিয়ে পড়েন। আমার বাসা থেকে শুক্রবার সকালে মামা তার কর্মস্থলে যাওয়ার কথাছিল। রাত সাড়ে এগারোটার দিকে মামা মোবাইল ফোনে খবর পান যুবলীগ নেতা টুকু মল্লি¬ক ও তার লোকজন হামলা চালিয়ে তার ভাই ও ভাতিজাদের আহত করেছে।  বিলম্ব না করে আমার স্বামী সেকান্দারকে সাথে নিয়ে মামা রিকশা যোগেসরাসরি গৌরনদী থানায় যান এবং ডিউটি অফিসারের কক্ষে অবস্থান করেন।। এর পর বিনা অপরাধে তিনি গ্রেফতার হন। পুলিশ অফিসারের ভাতিজা গ্রেফতারকৃত পুলিশ কনেষ্টবল রশিদ আকনের কন্যা নিপু বেগম (৩০)অভিযোগ করেন, আমাদের পরিবারের লোকজন আহত হবার পর আমরা থানায় মামলা দিতে গেলে ওসি মামলা নেননি। এ সময় মেযর আমাদের সাথে দুব্যবহার করেন এবং আমাদের থানা থেকে বের করে দেয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। তিনি গভীর রাত পর্যন্ত থানায় ওসির রুমে অবস্থান করে প্রতিপক্ষকে দিয়ে মামলা করান। অথচ ওসি সাহেব পৌর মেয়র হারিছের কথামতো  আমার নিরাপরাধ বাপ- চাচা ,স্বামী ও ভাইদের আহত অবস্থায় গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠান। এদিকে প্রতিপক্ষ টুকু মল্লি¬ক ও তার লোকজন এখনো তাদের ভযভীতি প্রদান করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।