আগৈলঝাড়ায় বিএনপি নেতা কর্তৃক গৃহবধুকে ধর্ষণ – শালিস বৈঠকে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা (বাহাদুরপাড়া) গ্রামের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা কর্তৃক এক গৃহবধুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এতে ওই গৃহবধূ ৫ মাসের অন্তঃস্বত্বা হয়ে পরলে গৃহবধুর অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় শালিস বৈঠকে বিএনপি নেতাকে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য প্রভাবশালী একটি মহল প্রশাসন ও কতিপয় সাংবাদিকদের মোটা অংকের টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে শালিস বৈঠকে উপস্থিত ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের শামিম বাহাদুর ঢাকায় চাকুরি করার সুবাধে তার বাড়িতে থাকা স্ত্রী ও এক সন্তানের জননী নাজমা বেগমকে ৬ মাস পূর্বে ঘরে একা পেয়ে উপর্যুপরী ধর্ষন করে পাশ্ববর্তী বাড়ির সাবেক স্কুল শিক্ষক ও বাগধা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাইয়ুম বকতিয়ার। লোক লজ্জার ভয়ে ওই গৃহবধু প্রথমে ধর্ষণের ঘটনাটি কাউকে না জানালেও ধর্ষণের ফলে সে অন্তস্বত্বা হয়ে পরায় বিষয়টি প্রকাশ পায়। বর্তমানে ওই গৃহবধু ৫ মাসের অন্তঃস্বত্বা। ঘটনাটি ফাঁস হয়ে গেলে এ নিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে ওই এলাকার আহম্মেদ বকতিয়ারের বাড়িতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই সালিশ বৈঠকে স্থানীয় প্রভাবশালী আসমত আলী বকতিয়ার, এমদাদুল বকতিয়ার, লুৎফর রহমান ভাট্টি, ধর্ষিতার বাবা ফিরোজ বকতিয়ার, চাচা ফেরদৌস বকতিয়ার, অভিযুক্ত কাইয়ুম বকতিয়ারের পুত্র মশিউর রহমান বকতিয়ারসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন। ওই শালিশ বৈঠকে কাইয়ুম বকতিয়ারকে ধর্ষণ ও অন্তঃস্বত্বার অভিযোগে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে নাজমার গর্ভের অনাগত সন্তানের ব্যাপারে সালিশ বৈঠকে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ওই বৈঠকের অন্তরালে থাকা ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীরা পুলিশ প্রশাসন ও কতিপয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার জন্য বিপুল অংকের টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে চেকের মাধ্যমে কাইয়ুম বকতিয়ার জরিমানার টাকা পরিশোধ করেছেন।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ ওসি (এস.আই) আলী আহম্মেদ বলেন, কয়েকদিন আগে এমন ঘটনার কথা শুনে থানার ওসি মোঃ সাজ্জাদ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তবে এরপর কি হয়েছে তা সম্পর্কে আমার জানা নেই। বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্টি জানান, গতকাল বুধবার সকালে আমাকে কাইয়ুম বকতিয়ার মোবাইল ফোনে বিষয়টি সমাধান হয়েছে বলে জানিয়েছেন। অভিযুক্ত কাইয়ুম বকতিয়ারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি স্থানীয় একটি কু-চক্রি মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার।