বাবুগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩০ জন আহত ভাংচুর – ১০ শিক্ষার্থী গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ ক্লাসে অনুপস্থিত থাকায় জরিমানা আদায় ও এক শিক্ষার্র্থীকে মারধরের ঘটনা নিয়ে বরিশালের বাবুগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে ছয় পুলিশসহ কমপক্ষে ২৪ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা কলেজের একটি টিন সেট রুম, পুলিশের একটি পিকআপ, দুটি মটরসাইকেলসহ ৫টি যানবাহনে ভাংচুর করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ১০জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে।

জানা গেছে, বাবুগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের কোন শিক্ষার্থী ক্লাস ফাঁকি দিলে প্রতি বিষয়ে ৫ টাকা হারে ও কলেজের টেস্ট পরীক্ষা না দিলে সাবজেট প্রতি ২০টাকা জরিমানা এবং কলেজের নির্ধারিত পোষাক পরে না আসলে ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে প্রায় শিক্ষার্থীদের কাছে কলেজ কর্তৃপক্ষ ১ হাজার থেকে ১৫’শ টাকা করে জরিমানা ধার্য্য করেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের মতবিরোধ দেখা দেয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীরা কলেজে এসে তাদের বিরুদ্ধে ধার্য্যকৃত জরিমানার টাকা বাতিল করার জন্য শিক্ষকদের কাছে আবেদন করেন। এ সময় কলেজের শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের দাবি না মানার পক্ষে মতদিলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা রহমতপুর-মীরগঞ্জ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এ ঘটনার পর কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরপর কলেজের শিক্ষকেরা বেশ কয়েকজন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীকে লাইব্রেরীতে নিয়ে মারধর করলে পুর্ণরায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে কলেজের একটি টিন সেট রুমে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করলে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংর্ঘষের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ছোঁড়া ইট-পাটকেলের মুখে পুলিশ পিছু হটে। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান, দুটি মটরসাইকেল ও একটি অটোবাইকে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।

শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের সংর্ঘষে বাবুগঞ্জ থানার এস.আই আনিচুর রহমান, এএসআই আব্দুল কুদ্দুস, কনস্টবল সোবাহান, জাহাঙ্গীর, ইউসুফ, আল-আমিন, শিক্ষার্থী মিলন, সৌরভ, মাহাবুব, সুমন, রুবেল, বাবু, কাদের, আলামিন, সাকিব, ইমরান, মেহেদী, রবিউল, নাইম, হাসান, সজিব কমপক্ষে ২৪ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হামলা ও সংঘর্ষের পর পরই ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি জিয়াউল আমিন জানান, পুলিশের ওপর হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় ১০ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।