বরিশালে পান বরজে ছত্রাক রোগ – চাষীরা দিশেহারা

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ ছত্রাকে আক্রান্ত হয়ে বরিশালের আগৈলঝাড়ার অধিকাংশ পান বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে উপজেলার পান চাষীরা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ১৭’শ ৪৪ জন চাষীর পান বরজের লাইনের সংখ্যা ২ লক্ষ ২৯ হাজার ৭’শ ১০টি। ওই উপজেলার চাষীদের নিজস্ব পুঁজি না থাকলেও পান চাষীরা বিভিন্ন এনজিও, ব্যাংক ও মহাজনদের কাছ থেকে চড়াসুদে টাকা নিয়ে পান চাষ শুরু করেছিলেন। গত এক সপ্তাহ থেকে পান বরজের পান লতা লালচে হয়ে শুকিয়ে পচন ধরে পড়ে যাচ্ছে। চাষীরা জানায়, এমন রোগে আক্রান্তর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বাকাল ও গৈলা ইউনিয়নে। এছাড়াও বাগধা, রতœপুর, রাজিহার ইউনিয়নে পান বরজে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ফলে উপজেলার পান চাষীরা লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বাকাল ইউনিয়নের বাকপাড়া গ্রামের পানচাষী রনজিত বিশ্বাস বলেন, এনজিও ও মহাজনদের কাছ থেকে চড়াসুদে টাকা এনে ৩২শতক সম্পত্তিতে পান চাষ করেছিলাম। সম্প্রতি পান বরজে এক ধরনের ছত্রাক রোগে আক্রান্ত হয়ে পানের লতার গোড়ায় পচন ধরে শুকিয়ে পান বরজের সব পান লতা থেকে ঝড়ে পরছে। তিনি তার বরজ দেখাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরে বলেন, পান বরজ থেকে পান বিক্রি করে যা আয় হতো তা দিয়ে ঋণ পরিশোধসহ সংসার চালিয়ে কোন রকম ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করাতাম। বর্তমানে এনজিওর ঋণ পরিশোধ তো দুরের কথা, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষী দর্জিরপাড় গ্রামের হরকুমার হালদার, সুকুমার হালদার, বাবু হালদার, রাজিহার গ্রামের স্বপন বালাসহ একাধিক কৃষকেরা জানান, তাদের পান বরজেও এ রোগ দেখা দিয়েছে। পান বরজে এ রোগ হলেও উপজেলা কৃষি অফিসের বাকাল ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ব্রজেন্দ্রনাথ কিছুই জানেনা বলে জানান। তবে কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, এটি এক ধরনের ছত্রাক জনিত রোগ। এ রোগে আক্রান্ত হলে রিডোমিল গোল্ড অথবা টিলড নামের ঔষধ প্রয়োগ করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যেতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।