রোগী নিয়ে চিকিৎসকের বানিজ্য – প্রতারিত হচ্ছে সাধারন রোগীরা

পরবর্তীতে তার মাকে নিয়ে গত ১৩ জুন ওই সেন্টারে আল্টাসনোগ্রাম করেন। ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান (ল্যাব) ডাঃ মোঃ ফাইজুল ইসলামের স্বাক্ষরিত প্রদানকৃত রির্পোটে উল্লেখ করা হয় রওশন আরার জরায়ু টিউমার হয়েছে। এ রির্পোট নিয়ে ডাক্তারের ব্যক্তিগত চেম্বারে আসলে চিকিৎসক সমীর চাকলাদার রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করা না হলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান। এতে আছমা ও তার মা আতংকিত হয়ে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়। এক পর্যায়ে ডাঃ সমীরের সাথে অপারেশনের জন্য তাদের ১৪ হাজার টাকার চুক্তিও হয়। টাকা সংগ্রহের জন্য তাদের (আছমাদের) নিকট আত্মীয়র কাছে গেলে তিনি (নিকট আত্মীয়) বরিশাল হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। তার পরামর্শে রওশন আরাকে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ দেলোয়ার হোসেনের কাছে নেয়া হয়। ডাঃ দেলোয়ার পূর্ণরায় আল্টাসনোগ্রাম করার জন্য বরিশাল মেডিনোভা ও পদ্মা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পাঠান। ওই দুই প্রতিষ্ঠানের রির্পোটেই রওশন আরার জরায়ুতে কোন টিউমারের আলামত পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ডাঃ দেলোয়ার রওশন আরার পেটের পিড়া সনাক্ত করে ব্যবস্থাপত্র দেয়ার পর ঔষধ সেবনে রওশন আরা সুস্থ্য হয়ে ওঠেন। 

আছমা বেগম আরো অভিযোগ করেন বলেন, ডাঃ সমীর চাকলাদার নিজে চিকিৎসক হওয়ার সুবাধে তার নিজের মালিকানাধীন আল্টাসনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে আমাদের পাঠিয়ে ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান দিয়ে ভূয়া রির্পোট করিয়ে আর্থিক হয়রানিসহ আমাদের আতংকিত করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে গৌরনদী ডক্টরস্ আল্টাসনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে গেলে একই ভাবে ভুয়া রির্পোটের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়ার কথা জানালেন পালরদী গ্রামের গৌতম চক্রবর্তী, ইল্লা গ্রামের হোসনেয়ারা বেগমসহ অনেকেই।

ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান (ল্যাব) ডাঃ মোঃ ফাইজুল ইসলামের কাছে ভূয়া রির্পোট প্রদান প্রসংঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রওশন আরার জরায়ুতে টিউমার অনুভব হওয়ায় আমি সেই রির্পোটই দিয়েছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গৌরনদী ডক্টরস্ আল্টাসনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে মালিক ডাঃ সমীর কুমার চাকলাদারের কাছে মোবাইল ফোনে রওশন আরার অসুস্থ্যতার কথা জানতে চাইলে তিনি জরুরী ভিত্তিতে রওশন আরার অপারেশন প্রয়োজন বলে জানান। এক প্রসংঙ্গে প্রতারনার মাধ্যমে রওশন আরাসহ অন্যান্য রোগীদের কাছ থেকে ভূয়া রির্পোটের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রওশন আরাকে ব্যবস্থাপত্র দেননি বলে জানান। উল্লেখ্য, গত ৭ জুন ডাঃ সমীর চাকলাদারের স্বাক্ষরিত ব্যবস্থাপত্র রওশন আরাকে দেয়া হয়।