প্রবাসী স্বামী পরিবারের লোকজনের হুমকীতে সাগর পাড়ের কন্যা সোনিয়া

ঝালকাঠি সংবাদদাতা ॥ স্বামী পরিবারের লোকজনের হুমকীতে নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে সাগর পাড়ের কন্যা সোনিয়া। খোরপোষ না দিয়ে স্বামী দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে থাকায় বিচারের দাবী জানালেও দেবরসহ স্থানীয় ভাড়াটে লোকজনের মহড়ায় পালিয়ে আসতে বাধ্য হন বলে ঐ গৃহবধূ অভিযোগ করেন। তিনি জানান, স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট একটি অভিযোগ দাখিল করেন। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রুস্তুম আলী উভয় পক্ষকে নোটিশ দেন এবং ১৮ নভেম্বর উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশ মোতাবেক বাদী সোনিয়া উপজেলা পরিষদে আসলেও বিবাদী পক্ষ অনুপস্থিত থাকে। এদিকে তার দেবর বশির হাওলাদার কিছু সন্ত্রাসীকে সাথে নিয়ে উপজেলা পরিষদের বাইরে অবস্থান নেয়। দুপুরে গেট থেকে বেরিয়ে সোনিয়া বরিগুনা ফেরার পথে অপরিচিত কিছু লোক তাকে অভিযোগের পথ থেকে সরে যেতে বলে নইলে ক্ষতি হবে বলেও হুমকী দেয়। এ ঘটনার পর স্থানীয় সাংবাদিক পান্নাসহ কিছূ লোক এগিয়ে আসলে ভাড়াটেরা সরে যায়।

জানাগেছে, গত ২০১০ সালে ভান্ডারিয়া উপজেলার গুলবুনিয়া গ্রামের আবুল বাশারের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ৪ বার তাকে শ্বশুড় বাড়িতে বেড়াতে নেয়ার পর জানতে পারে স্বামীর আরো এক স্ত্রী রয়েছে। আবুল বাশার বিদেশ যাবার পর তার ভাই বশির আহমেদ, শ্বাশুড়ী মিনারা বেগম ও শ্বশুর মোছলেম আলী হাওলাদার তাকে নানাভাবে নির্যাতন শুরু করে। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে গত ২০১১ সালের ৪ ফেব্র“য়ারী  আবুল বাশারের সহিত ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক রেজিষ্ট্রি কাবিনমূলে সোনিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর সে গত ২০ জানুয়ারী ২০১২ তারিখে তাকে পিত্রালয়ে ফেলে রেখে  সৌদি আরব চলে যান। সৌদি আরব যাবার পর তিনি জানতে পারেন স্বামীর বিবাহিত আরেক স্ত্রী রয়েছে। তিনি নাকি তাকে (১ম স্ত্রীকে) তালাক দিয়ে বিদেশ যান। স্বামীর সাথে ফোনে কথা বলে আগের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হন সোনিয়া। তখন তিনি স্ত্রীকে জানান ওকে বিদেশ আসার আগেই তালাক দিয়ে এসেছি, তুমি চিন্তে করনা। ওকে শীঘ্রই বিদায় দিয়ে দিচ্ছি। ওকে নিয়ে আর সংসার করবনা। দেশে আসার আগেই কোর্ট থেকে ওর বিদায় হয়ে যাবে। কিন্তু সে বিদেশ যাবার পর কিছুদিন তার সাথে ফোনে যোগাযোগ রাখলেও বর্তমানে ৭-৮ মাস যাবত শ্বশুর-শ্বাশুড়ীসহ অপরাপর লোকজনের প্ররোচনায় নানা জিনিসপত্র ও প্রথম স্ত্রীর আদালতের রায়ে ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকার একটি বড় অংক দাবী করে। তিনি যৌতুকের ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করলে সে তার  সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ করছেনা, এমনকি তাকে পিত্রালয়ে ফেলে রাখে। বর্তমানে সে কোন ধরনের খরচ বহনও করছেনা। তার বাড়িতে মা ও বাবার সাথে যোগাযোগ করলেও এর কোন সদুত্তর দিচ্ছেনা। বরং তার সাথে নানা দূর্ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করেন সোনিয়া। সোনিয়া আরো জানায়, এর আগে আমি বিচারের জন্য ঝালকাঠি নাগরিক ফোরাম পরিচালিত পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তি সেল বরাবরেও আবেদন করি। কিন্তু ৩ বার তাদেরকে নোটিশ করা সত্ত্বেও বিবাদীরা উপস্থিত হয়নি। পরবর্তীতে আমি বিচারের জন্য ভান্ডারিয়ায় আবেদন করেছি।