অতঃপর বরিশাল শেবাচিমের ধর্মঘট প্রত্যাহার – ৪ দিনে ৪৮ রোগীর মৃত্যু ৪শতাধিক রোগীর হাসপাতাল ত্যাগ

বরিশাল সংবাদদাতা ॥ টানা প্রায় ৪দিন পর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) ইন্টার্নি চিকিৎসকদের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। ইন্টার্নি ডাক্তার তম্ময় এর উপর হামলা কারি মৃত করিমন নেছার পুত্র পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড ও কর্মস্থলে হাজির হওয়ার নির্দেশ সহ শেবাচিমে পুলিশ বক্স নির্মানের শর্তে এই ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। গতকাল শনিবার দুপুর ২টার এই ২ঘন্টা ব্যাপী সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন. বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দরা ছাড়াও প্রশাসন, শেবাচিম পরিচালক ও ইন্টার্নি ডাক্তার এ্যাসোসিয়েশনের নেতা-কর্মীরা।

ওদিকে ধর্মঘট নামক এই যাতাকলে শনিবার সন্ধা পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে গত ৪দিনে ৪৮জন রোগীর। এছাড়া  চিকিৎসা না পেয়ে গত ৪ দিনে হাসপাতাল ছেড়েছে ৪ শতাধিক রোগী। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেটে দিয়েছে প্রায় ২শত রোগীর নাম।

ইন্টার্নী ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, তাদেও দাবী পূরনের আশ্বাস দেয়ায় তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের পরিচালক ফেরদৌস আলম শিবিব বলেন, হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসকরা রোগীদের সেবা অব্যাহত রেখেছিলেন। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিদুজ্জামান বলেন, হাসপাতালের পরিচালক বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু মামলায় আসামিদের তালিকায় সুনির্দিষ্ট করো নাম, ঠিকানা উল্লেখ করা হয় নি। চিকিৎসকদের লাঞ্ছনাকারীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

উল্লে, গত ১৯ নভেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হয়ে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হন গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ পলিকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মুনসুর আলীর স্ত্রী করিমন নেছা বেগম (৬০)। হাসপাতালের ৪র্থ তলায় মেডিসিন ইউনিট-৩ এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে পরিমন বেগমের মৃত্যু হয়।

তার মৃত্যুর জন্য ইন্টার্নি চিকিৎসকদের অবহেলাকে দায়ী করে এক ইন্টার্নি চিকিৎসকে লাঞ্ছিত করেন মৃত রোগীর স্বজনরা। পরে লাঞ্ছিত হওয়া চিকিৎসক অন্যান্য ইন্টার্নি চিকিৎসকদের খবর দিলে চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইন্টার্নি চিকিৎসকরা কর্মবিরতির ডাক দেন।