জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে বানারীপাড়ার প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা ওসমান গনি

রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া ॥ বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ সভাপতি এম. ওসমান গনি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সু-চিকিৎসার অভাবে অনেকটা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে রয়েছেন। তিনি গত ১০ আগষ্ট ব্রেইন ষ্টোকে আক্রান্ত হলে প্রথমে তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সর্বশেষ ঢাকার আল-রাজি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বানারীপাড়ায় প্রবীন এ নেতা শয্যাশায়ী রয়েছেন। ব্রেইন ষ্টোকের কারনে মুজিব অন্তঃপ্রাণ ওসমান গনি চলাফেরা ও বাক শক্তি হারিয়ে দিন দিন মৃত্যুর কাছাকাছি চলে যাচ্ছেন।পরিচিত জন বিশেষ করে দলের কাউকে কাছে পেলে তিনি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে চোখের জলে সিক্ত হন। দু’ চোখে তার বাঁচার করুন আকুতি। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ফারুক ও এর আগে পৌর মেয়র গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লা এবং পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও প্রেসক্লাব সভাপতি রাহাদ সুমন অসুস্থ ওসমান গনিকে দেখতে গেলে তার চোখের জল ও অসহায়ত্ব দেখে নিজেরাও অশ্রুসিক্ত হয়েছেন।

১৯৬৭ সালে চাখার সরকারী ফজলুল হক কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগের জিএস নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তার রাজনীতির কন্টকার্কিণ বন্ধুর পথে নিরন্তর ছুঁটে চলা প্রায় ৪৫ বছর পর থামিয়ে দিয়েছে ব্রেইন ষ্ট্রোক। ১৯৭২ সাল থেকে ৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি একাধারে সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও সর্বশেষ গত ১৪ মে সম্মেলনের দিন বিলুপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি আহবায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল সোনার বাংলা বির্নিমানে আপোষহীন ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৭ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান চাখার সরকারী ফজলুল হক কলেজ পরিদর্শনে এলে তৎকালীন জিএস ও তারন্যদীপ্ত ছাত্রলীগ নেতা ওসমান গনি নেতার গলায় পুস্পমাল্য পড়িয়ে দিলে বঙ্গবন্ধু সেই মালা খুলে তার গলায় পড়িয়ে দিয়ে দেশ ও জাতির কল্যানে আমৃত্যু কাজ করার উপদেশ দিয়েছিলেন। তিনি নেতার সেই নির্দেশনা ও উপদেশ মেনে ৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং অসুস্থ হওয়ার পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত সেই নির্দেশনা ও আদর্শ লালন করেছেন। রাজনীতির কন্টকার্কিণ পথে বার বার তিনি কাটার আঘাতে(মামলা-হামলা) রক্তাক্ত হয়েছেন, তবু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে কখনও বিচ্যুত হননি। তার ধ্যান, মন ও জ্ঞান সবই ছিল আওয়ামীলীগ ও বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে। বন্দর বাজারের তার বাসাটি নেতাকর্মীরা ব্যবহার করেছেন দলীয় কার্যালয়ের মতো। দলকে তিনি ভাল বাসতেন নিজ সন্তানের মতো। স্ত্রী ও সন্তানদেরও হাটিয়েছেন সেই আদর্শের পথে। একমাত্র ছেলে শাহীন মাহমুদ উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমানে যুবলীগের নেতা হিসেবে বাবার পাশে থেকেছেন সতীর্থ সহযোদ্ধা হয়ে। মেয়েরাও স্কুল-কলেজে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। জীবন-যৌবন উৎসর্গ করেছেন যে দলের জন্য সেই আওয়ামীলীগ ক্ষমতার আমলে অর্থাভাবে সুচিকিৎসার অভাবে বর্ষিয়ান পরীক্ষিত এই মুজব সৈনিক দিন দিন মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হচ্ছেন এ আপসোস ও কষ্টে চোখের জলে সিক্ত হচ্ছেন তার সহধর্মীনি উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি লিলি ওসমান। যিনি বিয়ের পর থেকে স্বামীর সঙ্গে এ জনপদে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে চলছেন। মুজিব আদর্শের পরীক্ষিত এই পরিবারের নেতাকে(ওসমান গনি) বাচাঁতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার উদারতার হস্ত মেলে ধরবেন এ কামনা বানারীপাড়ার প্রতিটি মুজিব প্রেমী নেতা ও কর্মীর।