চরমোনাইতে আসার উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহতায়ালাকে রাজী খুশি করা -পীর সাহেব চরমোনাই

চরমোনাই থেকে হাবিবুর রহমান ॥ গতকাল বাদ জোহর অগ্রহায়ণের বাৎসরিক মাহফিলে উদ্বোধনী বয়ান পেশ করেন চরমোনাইর পীর আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মোঃ রেজাউল করীম। তিনি তার বয়ানে মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আল্লাহতায়ালাকে রাজি খুশি করার জন্য তিন দিন ময়দানে সহীহ আমল খুলুছিয়াত সহকারে থাকতে পারলে আল্লাহ এমন বুঝ দান করেন যাতে মানুষ আল্লাহওয়ালা হয়ে যান। চরমোনাইর মাহফিল হলো ব্যাটারী চার্জের মত, বছরে দুইবার এখানে আল্লাহওয়ালা হওয়ার জন্য চার্জ দেওয়া হয়। আল্লাহর রহমতে মানুষ সারা বছর দীনের উপর অটল ও মজবুত থাকার হিম্মত পায়। তিনি বলেন, নফসের বিরুদ্ধে সর্বদা জিহাদ করা সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। আর চরমোনাইতে আসার উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহতায়ালাকে রাজী খুশি করা। চরমোনাইর বার্ষিক দুই মাহফিলে আল্লাহ ও তার রাসূলের নির্দেশিত পথে চলার শিক্ষাই দেয়া হয়। মন্দ স্বভাব পরিহার করে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে কিভাবে আল্লাহভোলা বান্দারা আদর্শ মানুষ হিসেবে তৈরী হতে পারে সেই উদ্দেশ্যেই এ মাহফিল। তিনি জানান, মরহুম পীর সাহেব মাওলানা সৈয়দ মোঃ ফজলুল করীম সাহেবের নানা আহছান উল্লাহ সর্বপ্রথম চরমোনাইতে মক্তব প্রতিষ্ঠা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় চরমোনাইতে বার্ষিক মাহফিলের কার্যক্রম চলে আসছে। আল্লাহর মেহেরবাণীতে দিনদিন মাহফিলে আগত মুসল্লীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

মাহফিলের ৩দিন মোট ৭ বার আমীরুল মুজাহিদীন ও নায়েবে আমরিুল মুজাহিদেনির বয়ান করবেন। এছাড়া প্রথম দিন অন্যান্যের মধ্যে বয়ান করবেন মওলানা সৈয়দ মোঃ মুবারক করীম, নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন, মাওলানা সৈয়দ মোঃ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, মাওলানা আইউব আলী আনছারী, মাওলানা ইউনুছ আহমাদ প্রমূখ।

মাহ্ফিলে প্রদত্ত বয়ান সমূহ যাতে সকলে সুন্দরভাবে শুনতে পারে সেজন্য সম্পূর্ন নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ৮৫০ টি মাইক ও ৮৮৮০ টি বৈদ্যুতিক বাতি লাগানো হয়েছে। পল্লী বিদ্যুত সরবরাহ না থাকাকালিন সময়ে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে ৩১৬ কেভি ও ৪৮ কেভি ২ টি জেনারেটর সার্বক্ষনিক প্রস্তুত রয়েছে। নিজস্ব ২ টি গভীর নলকুপের মাধ্যমে উত্তোলিত বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের জন্য প্রায় ১৫ হাজার পানির কল সংযোজন করা হয়েছে। পয়ঃ নিস্কাশনের জন্য কয়েক হাজার লেট্রিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মাহফিলে আগত মুজাহিদ ও মুসুল্লীরা খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা তাদের নিজেদের পক্ষ থেকেই আয়োজন করে থাকেন। একক ভাবে যারা মাহ্ফিলে আসেন তাদের খাওয়া দাওয়ার সুবিধার্থে কয়েকশত হোটেলের ব্যবস্থা রয়েছে। মাহফিলের শৃংখলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় ২৮৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ২৫০০ মাদ্রাসা ছাত্র সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে র‌্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মিগন এখানে দায়িত্ব পালন করছেন।

মাহফিলে আগত মুসুল্লিদের মধ্য থেকে যদি কেহ অসুস্থ হয়ে পরেন তাদের চিকিৎসার জন্য মাহফিল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কওমিয়া মাদ্রাসার নিচ তলায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট অস্থায়ি হাসপাতাল চালু রয়েছে, এমনকি রোগিদের বিনামূল্যে ঔষধ বিতরন করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু রয়েছে। এছারাও ১১ জন এমবিবিএস ডাক্তার সহ ৭০ জন প্রশিক্ষন প্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী দায়িত্ব পালন করছেন।

সূচি অনুযায়ী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে আগামীকাল বেলা ১১ টায় ওলামা ও সূধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন ইসলামী আন্দোলনের আমীর পীর সাহেব চরমোনাই।