স্বীকৃতির দাবীতে আদালতের কড়া নাড়ছে তৃতীয় বৌ! – ঝালকাঠির সাবেক জেলা রেজিষ্ট্র্রার নূরুল হকের বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা

ঝালকাঠি সংবাদদাতা ॥ ঝালকাঠি সাবেক জেলা রেজিষ্ট্রার কাজী নূরুল হকের নারী কেলেংকারী ফাঁসের পর এবার তার বিরুদ্ধে তৃতীয় স্ত্রী বরিশাল আদালতে মামলা দায়ের করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিউলি বেগম নামের তার তৃতীয় স্ত্রী বিয়ের স্বীকৃতি দাবীতে এ মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মামলাটি গ্রহন করে জুডিশিয়াল তদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন। মামলায় নুরুল হককে প্রধান আসামী করে দু’স্ত্রীসহ ৪জনকে আসামী করা হয়েছে।

জানাগেছে, অবৈধ কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক কাজী নুরুল হক। বর্তমানে দুদকের ভয়ে সম্পদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।  তার বিরুদ্ধে রেজিষ্ট্রিবিহীন এক বৌ বিচার চেয়ে এ সকল অবৈধ সম্পদের তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। বরিশাল, মঠবাড়িয়া, কাউখালীসহ রাজধানী ঢাকায় রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ি ও মার্কেট। দূর্নীতি দমন কমিশনের কাছে ধরা পড়ার ভয়ে এসবের বেশীর ভাগই করেছেন স্ত্রী ও সন্তানদের নামে। সুচতুর ধূরন্ধর কাজী নূরুল হক বলেছেন তার নিজের নামে কিছুই নেই। তিনি দু’বার হজ্জ্ব করেছেন, স্ত্রীদেরকেও হজ্জ্ব করিয়েছেন। অবৈধ কোন সম্পদ তার নেই।

নুরুল হকের তৃতীয় স্ত্রী বিয়ের স্বীকৃতির আশায় ঝালকাঠি নাগরিক ফোরাম পরিচালিত পারিবারিক বিরোধ নিস্পত্তি সেল ও ব্লাষ্ট বরিশাল বরাবরে নুরুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে। জানাগেছে, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার থানা পাড়া এলাকার বাসিন্ধা কাজী নূরুল হক। ১০ ভাই ২ বোনের মধ্যে নুরুল হক ভাইদের মধে বড়। ১৯৮৩ সালে ইন্দ্রেরহাট জিয়ানগর থেকে চাকরীতে যোগদান করে অর্থের জন্য বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ২০১১ সালের ৪ মে সদর সাব রেজিষ্টার থেকে অর্থের বিনিময়ে তিনি ঝালকাঠি জেলা রেজিষ্ট্রার ও ৬ মে বরগুনা জেলা রেজিষ্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পান। নারী কেলেংকারী ও অনৈতিক কাজের অভিযোগে তাকে চাকরী থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় সংশ্লিষ্ট বিভাগ। কিন্তু সুচতুর নুরুল হক সংশ্লিষ্ট দপ্তর ম্যানেজ করে রাতারাতি তিনি কোটিপতি বনে যান।

জানাগেছে, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া নিজ এলাকায় ক্রয় করেছেন প্রচুর পরিমানে জমি। মঠবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তার তিনটি বাড়ি। একটিতে রয়েছে ব্যাংক ভাড়া। সেখানে তিনি মায়ের নামে গড়ে তুলছেন মজিদা মোজাম্মেল মেমোরিয়াল হাসপাতাল। সেখানে মসজিদসহ মাদ্রাসাও রয়েছে। এছাড়া বরিশাল শহরের বৈধ্যপাড়ায় ‘নির্ঝর’ নামে আড়াইতলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি রয়েছে তার। চকবাজার ফলপট্টি গির্জামহল্লার জোহরা মার্কেটটিও তার কেনা। ওখানে ২৫টি ষ্টল রয়েছে তার নিজস্ব। রুপাতলীতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে জমি। বড় বৌ নূর জাহানের নামে রয়েছে বেশী সম্পদ। এছাড়া কাজী নূরুল হকের রাজধানী ঢাকার জুরাইনে রয়েছে ৪টি প্লট। এর মধ্যে ২০১০ সালে একটিতে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন থেকে ৭ তলার অনুমতি নিয়ে অনুমতিবিহীন ১০ তলার কাজ সম্পন্ন করে ফেলেছেন। এর ২য় তলায় থাকেন কাজীর প্রথম ঘরের সন্তান আফরোজা জাহান রনি। নুরুল হক বর্তমানে বরিশাল শহরের বৈধ্যপাড়ায় প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। দ্বিতীয় বউ থাকেন কাউখালীতে। আর তৃতীয় স্ত্রী স্বীকৃতির দাবীতে আদালতের কড়া নাড়ছে।