সাবধান! বরিশালে সক্রীয় প্রতারক চক্র – আগৈলঝাড়ায় দুই বৃদ্ধার ভেসেকটমি

আগৈলঝাড়া সংবাদদাতা ॥ দিনে দিনে প্রতারকের ফাঁদে পা ফেলছে গ্রামের সহজ সরল মানুষ। আর এখন অভিনব প্রতারনার ফাঁদ হচ্ছে পুরুষের বন্ধাকরন বা ভেসেকটমি। একটি ভেসেকটমি করাতে পারলে দালালরা হাতিয়ে নেয় কয়েক হাজার টাকা।

ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে বরিশাল শহরে একটি প্রতারক চক্র গ্রাম থেকে শহরে যাওয়া সহজ সরল লোকদের কৌশলে ডেকে নিয়ে বা কোন প্রলভনের ফাঁদে ফেলে প্রাইভেট ক্লিনেকে নিয়ে তাদের বন্ধাকরন বা ভেসেকটমি করিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। গত ২৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের আহুতি বাটরা গ্রামে মৃত- দ্বীনবন্ধু বালার ছেলে রমেশ বালা (৭০) বরিশাল জোনাল সেটেলমেন্টে জমিসংক্রান্ত মামলার কাজে গিয়ে দুপুরে ফেরার পথে কোট চত্বরে জনৈক দুই যুবক কিছু কথা আছে বলে রিক্সায় তুলে একটি ভবনে নিয়ে যায় এবং তাকে অচেতন করে রাখে। ৩ ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরলে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে ওই ভবন থেকে বের করে রিক্সায় তুলে দেয় প্রতারক চক্র। ঐ বৃদ্ধা বাড়ী এসে আপনজনের কাছে বিস্তর ঘটনা খুলে বললে স্থানীয় এক চিকিৎসক তাকে ভেসেকটমি করানো হয়েছে বলে সনাক্ত করেন। গতকাল শনিবার আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাঃ অসীম রঞ্চন হালদারের নিকট ভূক্তভোগী সমস্যা জানালে তিনি পরীক্ষা করে ভেসেকটমি বা বন্ধা করনের বিষয় উল্লেখ করেন। ডাঃ অসীম রঞ্জন জানান তরিঘরি করে এই অপারেশন করানোর কারনে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তিনি আরো বলেন দুই মাস পূর্বে একই ইউনিয়নের কান্দিরপাড় গ্রামের একই বয়সের এক বৃদ্ধা বরিশালে ঐ প্রতারক চক্রের ফাঁদে পরে বাধ্যতামূলক ভেসেকটমি করাতে বাধ্য হন এবং তার অপারেশনের স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে ভেসেকটমি সাধারনত সরকারী হাসপাতালে হয়ে থাকে। সম্প্রতি সরকার বেশকিছু বেসরকারী ক্লিনিকে এই অপারেশনের অনুমোদন দিয়েছে। বরিশাল সদরে বিএবিএস এবং মেরী ষ্টোপ নামে দুইটি প্রাইভেট ক্লিনিক ভেসেকটমি করানোর অনুমোদন পেয়েছে। তবে ভূক্তভোগী রমেশ বালাকে প্রতারক চক্র কোথায় নিয়ে এ কাজ করিয়েছে তা বলতে পারছেনা। তিনি জানান আমাকে রিক্সায় তুলে দেবার সময় ঐ যুবকরা আমার হাতে দুইশত টাকা ধরিয়ে দেয়। জানাগেছে একজন পুরুষ ভেসেকটমি করালে তাকে নগদ সাড়ে তিন হাজার টাকা এবং আরো কিছু সুবিধাদি দেওয়া হয়। প্রতারক চক্র সরকারী হাসপাতালে প্রশাসনিক ঝুঁকি ঝামেলার দায় এড়াতে বেশীর ভাগই প্রাইভেট ক্লিনিকে গ্রামের সহজ সরল বয়স্ক পুরুষদের প্রতারনার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।