আজ উজিরপুর মুক্ত দিবস

উজিরপুর সংবাদদাতা ॥ আজ ৫ ডিসেম্বর উজিরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে উজিরপুরের মাটি থেকে পাক হানাদারদের বিতাড়িত করেন মুক্তিযোদ্ধারা। শত্র“মুক্ত হওয়ায় এ দিনটিতে উজিরপুর জুড়ে ছিল আনন্দের বন্যা। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একাংশ এলাকার যুদ্ধ পরিচালিত হত উজিরপুরের বড়াকোঠার দরগাবাড়ি থেকে। ৯নং সেক্টরের হেড কোয়ার্টার হিসেবে যুদ্ধ পরিচালিত হত দরগাবাড়ি থেকে। সে কারণে পাক হানাদার বাহিনীর মূল টার্গেট ছিল উজিরপুর। যুদ্ধের সময় পাক হানাদার ও তার দোসররা বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার মানুষকে গণহত্যা করেছে। বিজয়ের প্রায় ২ মাস আগে ১৭ অক্টোবর দরগাবাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাটিতে আক্রমন চালাতে গিয়ে ওই এলাকার আশপাশ গ্রামগুলোতে নারকীয় তান্ডব চালায় ঘাতকেরা। তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি মায়ের কোলে থাকা দেড় মাসের ফুটফুটে শিশু আনারকলি। মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে শিশুটিকে। একই দিনে ৭১ জন গ্রামবাসিকে হত্যা করে তারা। এ সময় ঐতিহ্যবাহী ধামুড়া বন্দরসহ বেশ কয়েকটি বাজারে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। অসংখ্যা নারীর উপর চালায় পাশবিক নির্যাতন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে সারাদেশের চূড়ান্ত বিজয়ের ১১ দিন আগে ৫ ডিসেম্বর উজিরপুরকে শত্র“মুক্ত করে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে বেঁচে যাওয়া ৫৫ জন পাকিস্তানি আর্মি এবং ৩৫ জন রাজাকার আলবদর এদিনে কাকডাকা ভোরে বেইজ কমান্ডার আব্দুল ওয়াদুদ সরদারের কাছে আত্মসমর্পণ করলে উজিরপুরের দামাল ছেলেরা আনুষ্ঠানিক ভাবে মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি করে উজিরপুরকে শত্র“মুক্ত করে।