বরিশালে ১৮ দলের মিছিলে পুলিশের অ্যাকশন, টিয়ারসেল নিক্ষেপ, দফায় দফায় সংঘর্ষে নগরী রনক্ষেত্রে পরিণত, আহত ২০, আটক ৪

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ আজকের হরতালের সমর্থনে গতকাল সোমবার বিকেলে বরিশালে বের হওয়া ১৮দলের মিছিলে আকস্মিক হামলা চালায় পুলিশ। এতে পুলিশ ও ১৮ দলের কর্মিদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে নগরীর সদর রোড, গীর্জামহল্লা, ফলপট্রি, চকবাজার সহ বিভিন্ন এলাকা রনক্ষেত্র পরিণত হয়। ঘন্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে পুরো নগরীতে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা আতংকিত হয়ে দোকান পাট বন্ধ করে রাখার পাশাপাশি পথচারীরা দিকবিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন। পুলিশের টিয়ারসেলে নগরীর অধিকাংশ এলাকা ধোয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। বিএনপি কর্মিরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে টিয়ারসেলের ধোয়া থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার চেষ্টা চালায়। রাবার বুলেটের আঘাতে ২০ জন বিএনপি কর্মি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৪ বিএনপি কর্মিকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন সোহেল, সুমন, বিপ্লব ও জুয়েল।

বরিশাল মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহিন ও মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম খসরু জানান, হরতালের সমর্থনে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে আমাদের নেতাকর্মিরা নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্বরে জড়ো হওয়ার প্রাক্কালে আকস্মিক হামলা চালায় পুলিশ । এতে পুলিশের সাথে দফায় দফায় ১৮ দলের নেতাকর্মিদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের টিয়ারসেল ও লাঠিচার্জে অন্তত ২০ জন নেতাকর্মি আহত হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
বরিশাল জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন জানান, আমিসহ জেলা বিএনপির নেতাকর্মিরা হরতালের সমর্থনে সদর রোডে মিছিল করার জন্য দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হই। হরতালের পক্ষে শ্লোগান দেয়ার এক পর্যায়ে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এতে জেলা বিএনপির ১৫-২০ জন নেতাকর্মি আহত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

বরিশাল-৬ বাকেরগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেন খান জানান, হরতালের সমর্থনে মিছিল করার জন্য বাকেরগঞ্জ থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মি নিয়ে নগরীতে জড়ো হয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের বেপরোয়া আক্রমনের কারনে আমাদের মিছিলটি পন্ড হয়ে যায়।

বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বিএনপি কর্মিদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও বিশৃংখলা দমন করতে ৩৫ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ১০ রাউন্ড টিয়াসেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অন্তত শতাধিক রাউন্ড রাবারবুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জে বিএনপি-জামায়াত কর্মিরা ছাড়াও বিপুল সংখ্যক পথচারী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।