দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ ১৫টি নৌ-রুট চরম ঝুঁকিতে

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ চরম ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে ঢাকা-বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ ১৫টি নৌ-রুটে চলাচলকারী নৌ-যান। এরুট গুলোতে নৌ-সিগন্যাল বাতি বা বিকন বাতি না থাকায় এ ঝুঁকির সৃস্টি হয়েছে। তবে বিআইডব্লি¬উটিএ বরিশালের নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগ দাবি করেছেন, গত এক বছরে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার নৌ-সিগন্যাল বাতি ও যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে। আর এজন্য এ নৌ-রুটগুলো এলাকার সংশ্লিষ্ট থানায় দায়ের করা হয়েছে অর্ধশতাধিক সাধারন ডায়েরী। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যেসব নৌ-পথ থেকে দিকনির্দেশনা বাতি উধাও বা চুরি হয়ে গেছে সে সবস্থানে অস্থায়ী ভিত্তিতে দিক নির্দেশনা দিয়ে রাখা হয়েছে।

বরিশাল বিআইডব্লি¬উটিএ’র নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নৌ-যান চলাচল নির্বিঘœ করতে ঢাকা-বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ ১৫টি নৌপথে বিকন বাতি বসানো হয়েছে। তবে রক্ষণাবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানেরর অভাবে সময়ের আবর্তে এ নৌ-পথগুলো থেকে অনেক দিকনির্দেশনা বাতি উধাও হয়ে গেছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করা হলেও কাউকে অভিযুক্ত না করায় জিডির পর জিডি জমা হয়ে পরেই রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল অফিসের বিকন বাতির দায়িত্বে থাকা মোঃ ফরিদ উদ্দিন জানান, এক একটি বিকন বাতির মধ্যে সোলার প্যানেল, সিগন্যালসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ থাকে। গত কয়েক বছরে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নৌ-পথের এসব বাতি চুরি হয়ে গেছে। বিশেষ করে ঢাকা-বরিশাল নৌ-পথসহ পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনাসহ বিভিন্নস্থান থেকে বিকন বাতি চুরি হয়ে গেছে। সুত্রে আরো জানা গেছে, সর্বশেষ গত এক বছরে বিকন বাতি চুরি হয়েছে আটটি। এছাড়া আটটি সোলার প্যানেল ও ছয়টি সিগন্যাল বাতি চুরি হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ লক্ষ ১২ হাজার টাকা। জানা গেছে, একটি সংঘবদ্ধ চক্র নৌ-পথ থেকে এসব দিক নির্দেশক চুরি করায় রাতে নৌ-যান চালাতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যারফলে এ অঞ্চলের রুটগুলোতে অনেকাংশে দিকনির্দেশক শুন্য হয়ে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, দিক নির্দেশক উধাও হওয়ার পেছনে বিআইডব্লি¬উটিএ’র কতিপয় কর্মচারীরা জড়িত রয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, নৌ-যান বিশেষ করে লঞ্চ চলাচল নির্বিঘœ করতে বিকন বাতির কোন বিকল্প নেই। তাই যেসবস্থানে এ দিক নিদের্শক বাতি নেই সেখানে সব সময় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। ফলে প্রায়ই লঞ্চ চরে উঠে গিয়ে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সংশ্লি¬ষ্ট এলাকার থানা পুলিশ একটু তৎপর হলেই এ চুরি রোধ করা সম্ভব।

বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের বরিশাল জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ একিন আলী মাষ্টার জানান, বাতি না থাকায় নৌ-যান চালানোর সময় চরম ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়া সত্বেও বিআইডব্লি¬উটিএ সরঞ্জামাদি সরবরাহ না থাকার অভিযোগ দেখিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, নৌ-রুটগুলি থেকে যে কয়টি বাতি চুরি হয় বিআইডব্লি¬উটিএ কর্তৃপক্ষ তার দ্বিগুন খরচ বিবরনী দেখিয়ে সরকারি অর্থ লুটপাট করে থাকে। বিআইডব্লি¬উটিএ বরিশালের নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগের উপ-পরিচালক আশরাফ হোসেন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দক্ষিণের বিভিন্ন রুট থেকে দিক নির্দেশক চুরি হওয়ায় সংশ্লি¬ষ্ট থানায় এ পর্যন্ত অর্ধশত সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। তাছাড়া চুরি হওয়ার পরপরই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।