আগৈলঝাড়ায় অনুষ্ঠানের নামে আ’লীগ নেতার চাঁদা উত্তোলণ

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সরকারের উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের ৭০ জন উপকারভোগীদের কাছ থেকে অনুষ্ঠানের অযুহাত দেখিয়ে চাঁদা উত্তোলন করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী এক আ’লীগ নেতা। এ নিয়ে এলাকায় চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

উপকারভোগী ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাজিহার-বাশাইল-মাগুরা ভেরী বাঁধ সড়কে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় ৭০ জন সুফলভোগীকে নিয়ে তিনটি সমিতি গঠন করে বন বিভাগ বিভিন্ন প্রজাতের গাছ রোপন করে। এ লক্ষ্যে সরকারের বন বিভাগের সাথে সুবিধাভোগী সদস্যদের হিস্যা অনুযায়ী চুক্তিপত্রও সম্পাদিত হয়। ২০০৭ সালে সিডরে প্রকল্পের ব্যাপক গাছ উপড়ে পরায় টেন্ডারের মাধ্যমে গাছগুলো বিক্রি করা হয়। তাছাড়া ২০১০ সালের শেষের দিকে প্রকল্পাধীন রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ শুরু করলে রাস্তার দু’পাশে বিপুল পরিমাণ গাছ পুনরায় টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। উপজেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমান জানান, দু’দফায় টেন্ডারে বিক্রিত গাছের মূল্য প্রায় ৪ লক্ষ টাকা। তিনি আরও জানান, প্রত্যেক সুবিধাভোগীর অনুকূলে ইতোমধ্যে সাড়ে ৫ হাজার টাকা করে চেক বিতরনের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

উপকারভোগীরা অভিযোগ করেন, তিনটি কমিটির মাধ্যমে প্রকল্পের আওতায় গাছ রোপন করা হলেও রাজিহার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেমায়েত উদ্দিন সরদার টাকা বন্টনের কথা জেনে কৌশলে সুফলভোগীদের অর্থ বিতরণের জন্য আলাদা একটি কমিটি তৈরি করেন। যে কমিটি সুবিধাভোগীদের অর্থ বিতরণ ও তদারকি করবেন। ওই কমিটির সভাপতি করা হয় হেমায়েত উদ্দিনের বড় ভাই আব্দুর রশিদ সরদারকে। তিনি দলীয় রাজনীতিতে তার নিজের অবস্থান দেখানোর জন্য বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুসকে দিয়ে সুফলভোগীদের মধ্যে চেক বিতরণ করাবেন বলে জানিয়েছেন। ওই চেক বিতরন অনুষ্ঠান করার জন্য তিনি সুফলভোগী সদস্যদের কাছ থেকে ৪’শ টাকা করে প্রায় ২৮ হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলের নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্ ও এমপি ইউনুসের নাম ভাঙ্গিয়ে হেমায়েত উদ্দিন ও তার ভাই রশিদ সরদার চাঁদা উত্তোলন করলেও ওই নেতৃবৃন্দরা এর কিছুই জানেন না।

এ ব্যাপারে আ’লীগ নেতা হেমায়েত উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ রকম অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই। তাছাড়া অনুষ্ঠান হলেও হতদরিদ্র জনগনের টাকা নিয়ে অনুষ্ঠান করতে হবে তা কেন? যদি অনুষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলনের খবর প্রমানিত হয় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।