বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক থেকে সরানো যাচ্ছে না স্পিডব্রেকার ও হাট-বাজার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বরিশাল কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল নথুল্লাবাদ থেকে গৌরনদীর ভূরঘাটা পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার মহাসড়কে অবৈধভাবে নির্মান করা হয়েছে প্রায় দু’ডজন স্পিডব্রেকার (গতিরোধক)। দুর্ঘটনা রোধে স্থানীয়ভাবে প্রভাব খাটিয়ে মহাসড়কের ওপর অবৈধভাবে অপরিকল্পিত ভাবে এসব স্পিড ব্রেকার নির্মান করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও জনগুরুতপূর্ণ এ মহাসড়কের উল্লেখিত এলাকার রাস্তার পাশে বসানো হয়েছে অর্ধশতাধিক হাট-বাজার। স্পিট ব্রেকার ও মহাসড়কের পাশের হাট-বাজার অপসারণ করতে সরকারের সিদ্ধান্ত এখানে আজো কার্যকর করা হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ থাকা সত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের বাঁধার কারনে অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত বিপজ্জনক এসব স্পিড ব্রেকার ও হাট-বাজার তুলে দেয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, দুর্ঘটনা রোধের এসব অপরিকল্পিত স্পিড ব্রেকার এখন মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। মহাসড়কের পাশে হাট-বাজার অপসারণ না করায় ওইসব এলাকায় যানজট লেগেই রয়েছে। ফলে এগুলোকে অপসারণ করে নিরাপদ বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করেছেন সর্বস্তরের জনসাধারন।

বরিশাল সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ মোহাম্মদ শামস্ মোকাদ্দেস বলেন, ২০১২ সনের অক্টোবর মাসে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় মহাসড়কে নিয়ম বহির্ভূতভাবে যত্রতত্র স্থাপিত স্পিড ব্রেকার তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। তবে সওজ অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গেলে সমস্যারও সৃষ্টি হয়। স্পিড ব্রেকার তুলে নিতে গেলে বিভিন্নস্থানে স্থানীয় লোকজন সওজকে বাঁধা দেয়। ফলে সওজ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তারা বলেন, পরিষদের সভায় মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন হাট-বাজার অপসারণেরও সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের বাঁধার কারনে অদ্যবর্ধি তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

গৌরনদী হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, মহাসড়কের গৌরনদীর বার্থী বাজারে স্থানীয় প্রভাবশালীদের উদ্যোগে নির্মিত অপরিকল্পিত স্পিড ব্রেকারের কারনে ইতোমধ্যে ওই এক স্থানেই দূর্ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু ও অসংখ্য লোকের পঙ্গুত্ব বরন করতে হয়েছে। মহাসড়কে স্পিড ব্রেকার দুর্ঘটনারোধক হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এটি নিজেই দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই অবস্থা বাটাজোর বাজারে। ওই একটি বাজারেই তিনটি ¯িপট ব্রেকার নির্মান করা হয়েছে। এছাড়া ওই বাজারে মহাসড়কের ওপর প্রতিদিন ভোরে পানের হাট বসায় ওই এলাকায় যানজট ও ছোট-বড় দূর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। এছাড়াও মহাসড়কের বামরাইল বাজারে দুটি, নতুনহাটে দুটি, ইচলাদী ও জয়শ্রী বাসষ্ট্যান্ডে দুটি করে অপরিকল্পিত স্পিট ব্রেকার নির্মান করায় যানবাহন চলাচলের জন্য মহাবিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যানবাহন চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত স্পিডব্রেকার ও মহাসড়কের পাশের হাট-বাজারগুলো তুলে দিয়ে সরকারি পরিত্যক্ত জায়গাগুলোতে স্থানন্তর করাসহ স্পিডব্রেকারের পরিবর্তে স্পিড রিডিউসার ব্যবহার করার জন্য সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।