ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ জেলা প্রশাসকের – সুগন্ধা নদীতে ধরা পড়ছে ছোট মাছ

ঝালকাঠি সংবাদদাতা ॥ সুগন্ধা-বিষখালী নদীতে অহরহ ধরা পড়ছে ছোট ছোট মাছ ধরার খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশের পর জরুরী ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসক মো. শাখাওয়াত হোসেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য, ঝালকাঠি শহর সংলগ্ন নদীর আশপাশে দৈনিক ২০-২৫ টি নৌকায় জেলেরা ঘোষিত নিষিদ্ধ ছোট ফাঁদের জাল পেতে এ সব মাছ নিধন করা হচ্ছে। এর মধ্যে ইলিশের পোনা, বাইলা, পোমা, ছোট চিংড়ি ও রামছোসের পোনা উল্লেখযোগ্য হারে নিধন করা হচ্ছে। মৎস্য বিভাগের বরাদ্ধ না থাকায় জেলেরা এ সুযোগে মাছের পোনা নিধন করছে প্রকাশ্যেই। ১লা নভেম্বর থেকে ৩১মে পর্যন্ত নদীতে সকল ধরনের জাল পাতা নিষিদ্ধ ঘোষনা করে সরকার। তবে নিষিদ্ধের কথা মানছেনা জেলেরা। তারা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অহরহ নদীতে জাল পেতে মাছের পোনা নিধন করছে।

ঝালকাঠি জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানিয়েছিলেন, সারা বছরের জন্য বাঁধা জাল, বেহেন্দিজাল, চরগড়া, কারেন্ট জাল পাতা নিষিদ্ধ রয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী ৯ ইঞ্চি পরিমাপের ঝাটকা ধরা পরিবহন ও ক্রয় বিক্রয় আইনগত দন্ডনীয় অপরাধ। সংশ্লিষ্ট বিভাগ অভিযুক্ত জেলেকে ৬ মাসের জেল অথবা ১ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডেও দন্ডিত করতে পারেন।

এদিকে সংশ্লিষ্ট মৎস্য দায়সারা ভাবে শুধু বিভাগ বাজার পরিদর্শন, লিফলেট বিতরন, ব্যানার ও মাইকিং করে প্রচারনা অব্যাহত রাখছে। এতে প্রচারনা জেলেদের কানে পৌঁছেনা।

দেখাগেছে, এসব জালে প্রতিবার আধামন থেকে একমন মাছের পোনা ধরা পড়ে। জেলেরা মাছ গুলো প্রকাশ্যে শহরের অলিগলি রোডে এমনকি বাজার গুলোতেও বিক্রি করছে। ভ্রাম্যমান আদালত দ্ধারা দন্ডিতের নিয়ম থাকলেও এ প্রকল্পে বরাদ্ধ না থাকায় মৎস্য বিভাগ হিমশিম খাচ্ছে। কারন হিসেবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেছেন, গত মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা প্রকল্পের ২০ হাজার টাকা বরাদ্ধ এখনও পাওয়া যায়নি। চলতি কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্ধ শীঘ্রই আসছে বলে তিনি জানান।

এদিকে চলতি মৌসুমে নদীতে কোন ধরনের অভিযানের দেখা মেলেনি। অভিযোগ রয়েছে মৎস্য বিভাগের এক শ্রেনীর দালাল-চাটুকার কর্মচারীরা জেলেদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নেয়ারও। ফলে এরা দেদারছে মাছের পোনা ধরে পানির দামে বিক্রি করছে । প্রতি কেজি পোনা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা। যা বড় হলে দাম হত ৫ হাজার টাকা। এ ভাবে দৈনিক গড়ে ১০ মন মাছের পোনা এ সব জালে আটকা পড়ছে।

নদীতে মাছের পোনা নিধনের ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ঝালকাঠি নাগরিক ফোরাম নেতৃবৃন্দ। জেলেরা যে প্রক্রিয়ায় নদীতে মাছের পোনা এবং খাল-নালা থেকে মাছ নিধন করছে এতে একদিন এ অঞ্চলের মানুষ মাছের স্বপ্ন ভুলে যাবে। তাই এখনি এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনকে এগিয়ে আসা উচিৎ। সেই সাথে এলাকার সচেতন মহলকেও অগ্রনী ভূমিকা রাখতে হবে।