বিবাহিতদের দিয়ে আগৈলঝাড়ায় চলছে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের কার্যক্রম

আগৈলঝাড়া সংবাদদাতা ॥ বিবাহিত ও অছাত্র দিয়ে চলছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের দলীয় কার্যক্রম। ফলে দু’সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রমে ঝিমিয়ে পরেছে। নতুন কমিটি না হওয়ায় দলীয় কর্মসূচী পালন করতে অনীহা প্রকাশ করেছে বর্তমান নেতাকর্মীরা। দলীয় একাধিকসূত্রে জানা গেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় বিগত ১০বছর যাবৎ উপজেলা ছাত্রলীগ ও ১১বছর ধরে ছাত্রদলের কোন সম্মেলন না হওয়ায় সাধারণ ছাত্রনেতাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে উপজেলা ছাত্রলীগও ছাত্রদলের মত রাজনীতিতে নেতৃত্বহীন হয়ে পরেছে। বিপুল সংখ্যক ছাত্রনেতা দীর্ঘদিন ধরে পদ প্রত্যাশী হয়ে দলীয় কর্মকান্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখলেও দীর্ঘদিন যাবৎ সম্মেলন না হওয়ার ফলে তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। মেয়াদোত্তীর্ণ উপজেলার এ দু’টি ছাত্র সংগঠনের বর্তমান কমিটির পদ-পদবীধারী অধিকাংশ নেতারই দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রত্ব নেই। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদের নেতারা বিবাহ করে সাংসারিক কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। এদের অনেকে বর্তমানে একাধিক সন্তানের জনক। তারা এখন ব্যবসা-বানিজ্য ঠিকাদারী, চাকুরী ও সংসার নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। তবে দু’দলের মেয়াদোত্তীর্ণ বর্তমান কমিটির ছাত্রনেতারা নেতৃত্বে থাকার ফলে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তাদের উপর বিশ্বাস ও আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। ফলে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতাদের নেতৃত্বে আসার যোগ্য বয়সসীমা পেরিয়ে যাচ্ছে অনেক অবিবাহিত ছাত্রদের। দু’দলের পদ প্রত্যাশী ত্যাগী অনেক ছাত্রনেতা তাদের কর্মীদের পিছনে ব্যাপক অর্থ ব্যয় করছেন কাউন্সিলে পদ পদবী পাওয়ার জন্য। শুধু তাই নয় পদ পাবার আসায় শীর্ষনেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে অনেক ছাত্রনেতা।

তৃণমূল পর্যায়ের ছাত্রনেতারা জানান, দলের ত্যাগী ও মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে যাদের সুসম্পর্ক রয়েছে তাদের মধ্য থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বাণ জানান তারা। উপজেলা ছাত্রলীগের একটি সূত্রে জানা গেছে, গত ২০০৩ সালে ঢাকায় বসে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন আহ্বায়ক মিলন ভূঁইয়ার উপস্থিতিতে কামরুজ্জামান সেরনিয়াবাত আজাদকে সভাপতি ও সোয়েব ইমতিয়াজ লিমনকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা ছাত্রলীগের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির মেয়াদ ২বছর থাকলেও এ পর্যন্ত ৯ বছর পার হলেও অদ্যাবধি নতুন কমিটি গঠন করা হয়নি। কমিটি গঠণের পর থেকে সভাপতি ও সম্পাদকের মধ্যে আলাদা দু’টি গ্রুপের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে ওই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতাদের দিয়েই চলছে দলের সার্বিক কার্যক্রম। একারণে গত ২০১০ সালের ৩ ডিসেম্বর দলীয় কোন্দলের কারণে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় উপজেলা ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত করে দেয় জেলা ছাত্রলীগ। অপরদিকে ২০০২ সালের ১৭ এপ্রিল বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মনোয়ার হোসেন জিপু ও সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আকন বিপ্ল­বের উপস্থিতিতে আগৈলঝাড়া ডাকবাংলোতে শামসুল হক খোকনকে সভাপতি ও হেমায়েত তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠণ করা হয়। এর ৩বছর পরে ওই কমিটি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান ও আকন কুদ্দুসুর রহমান গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছে। একারণে তৃণমূল পর্যায়ে ছাত্রদলের কর্মীরাও দু’ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ওই মেয়াদোত্তীর্র্ণ কমিটি দিয়ে চলছে দলীয় কার্যক্রম। ছাত্রদলের সভাপতি ও সম্পাদক বহুদিন পূর্বে বিয়ে করে একাধিক সন্তানের পিতা হয়ে বর্তমানে ব্যবসা বানিজ্যে ব্যস্ত রয়েছেন। তারা আবার পুনরায় দলের সভাপতি সম্পাদক হওয়ার জন্য দলের হাইকমান্ডের সাথে লবিং করছেন বলে একাধিক দলীয়সূত্রে জানা গেছে। ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি শামসুল হক খোকনের উপজেলা সদরের দলীয় কোন কার্যক্রমে কোন অংশগ্রহণ নেই। একারণে তার স্বাক্ষর জাল করে তার অনুসারী ছাত্রদল নেতারা প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষনেতারা সবাই বিবাহিত। তাদের দিয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করায় তৃণমূল নেতাকর্মীরা দলের হাইকমান্ডের উপর ক্ষুব্ধ রয়েছে।