নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী টরকী বন্দর ভিক্টোরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অস্টম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র অপহৃত রানা দাসকে চারদিনেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার অগ্রগতি ও পুলিশের নিস্কৃয়তার ভূমিকা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম আতংক। অপহৃত রানাকে উদ্ধার ও অপহরনকারীদের বিচারের দাবিতে স্বোচ্ছার হয়ে উঠেছে তার সহপাঠী ও এলাকার সর্বস্তুরের মানুষ।
এদিকে গতকাল বুধবার বিকেলে বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক গ্রেফতারকৃত তিন আসামির দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
অপহৃতার পরিবার, পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার সুন্দরদী মহল্লার ব্যবসায়ী কৃষ্ণ দাসের পুত্র ও উপজেলার টরকী বন্দর ভিক্টোরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র রানা দাসকে গত ১৩ জানুয়ারি বিকেলে কৌশলে স্থানীয় কার্তিক ভক্ত, সুলতান শরীফসহ তাদের সহযোগীরা অপহরন করে পাচার করে। ১৪ জানুয়ারি রাতে এঘটনায় অপহৃতার পিতা কৃষ্ণ দাস বাদি হয়ে কার্তিক ভক্ত, সুলতান শরীফ ও তার স্ত্রী হেনা বেগমকে আসামি করে গৌরনদী থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে তিন আসামীকেই গ্রেফতার করেন।
অপহৃতার মা ঝর্না দাস অভিযোগ করে বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের পর অপহরন ও পাচারের ঘটনা বর্ননা করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়। অথচ গ্রেফতারের তিন দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ আমার একমাত্র বুকের ধন রানাকে উদ্ধার করতে পারেনি। পুলিশ নানা অজুহাতে কালক্ষেপন করছে। এ অবস্থায় অপহরনকারী দলের অন্যান্য সদস্যরা রানাকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে টরকী বন্দর আনোয়ারা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির পরিচালক আলহাজ্ব আবুল হোসেন মিয়া বলেন, রানা অপহরনের পর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে অপহরন আতংক দেখা দিয়েছে। ফলে স্কুলের উপস্থিতি সংখ্যা অনেক কমে গেছে। টরকী বন্দরের ব্যবসায়ী শেখর দত্ত বণিক বলেন, এ ঘটনার পর তার স্কুল পড়–য়া সন্তানকে ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অপরদিকে রানাকে উদ্ধার ও অপহরনকারীদের ফাঁসির দাবিতে রানার বিদ্যালয় টরকী বন্দর ভিক্টোরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ১৫ জানুয়ারি বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদীর নীলখোলায় অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। গতকাল বুধবার বিকেলে স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন, আগামি ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ অপহৃতা রানাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলে কঠিন আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে।
গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামি কার্তিক ভক্ত, সুলতান শরীফ, ও তার স্ত্রী হেনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মোসাদ্দেক মিনহাজ প্রত্যেককে দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।