বরিশালের গৌরনদীতে আরিফ ফিলিং স্টেশনের মালিকানা ও ঋণের টাকা পরিশোধকে কেন্দ্র করে মালিকদের দু’পক্ষ ফিলিং স্টেশনের তিন মালিকসহ ২৭৩ জনকে আসামি করে গৌরনদী থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কটকস্থল গ্রামের মো. হিরা মাঝির স্ত্রী রেখা বেগম বাদী হয়ে একটি ও অপরটি মামলাটি তাঁরাকুপি গ্রামের মো. হারুন অর রশিদের কন্যা পপি বেগম বাদী হয়ে দায়ের করেন।
গৌরনদী থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, কটকস্থল আরিফ ফিলিং স্টেশনের মালিকানা ও ঋণের টাকা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে কটকস্থল গ্রামের রেখা বেগম বাদী হয়ে মো. হারুন অর রশিদ বেপারী, তার কন্যা পপি বেগম, মেয়ে জামাতা সরকারি চাকুরিজীবি আজমল আলম সিদ্দিক সোহাগসহ ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। অপর মামলাটি পপি বেগম বাদী হয়ে মো. মানিক মাঝি, মো. হিরা মাঝি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান ঈঙ্গুল মাঝি, সিফাত মাঝি, তুহিন মাঝি, সাদ্দাম মাঝি, মনির মাঝি, সুজন মীর, টুলু সরদারসহ ১৬ জনের নামোল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনকে আসামি করে পাল্টা মামলা দায়ের করেছে। এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে ওসি ইউনুস মিয়া জানান।
বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ গতকাল মঙ্গলবার সকালে গৌরনদী মডেল থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলার তাঁরাকুপি গ্রামের হারুন অর রশিদ বেপারী ২০১৯ সালে কটকস্থল বাসস্ট্যান্ডের কাছে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক ঘেঁষে নিজ জমিতে একমাত্র পুত্র সন্তানের নামে আরিফ ফিলিং স্টেশন তেলের পাম্প নির্মাণ কাজ শুরু করেন। নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময় টাকার অভাবে তেলের পাম্পটি চালু করতে না পারায় ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সুন্দরদী গ্রামের মো. ফরহাদ হোসেন মুন্সীর কাছে ৩৩ ভাগ ও কটকস্থল গ্রামের মজিবর রহমান মাঝির কাছে তার অংশ নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বিক্রি করেন। ওই বছরের ১১ জুন ফরহাদ মুন্সী তার মালিকানার অংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান মাঝির বড় ছেলে মানিক মাঝির কাছে বিক্রি করে দেয়। এছাড়া ব্যবসা পরিচালনার জন্য মজিবর রহমান মাঝির মেঝ ছেলে হীরা মাঝির কাছ থেকে পাম্পের তেল ক্রয় করার জন্য স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ৪০ লাখ টাকা সুদে নেয় ফিলিং স্টেশনের মালিকরা। তবে পরবর্তী সময়ে হারুন ও তার মেয়ে পপি, জামাতা সরকারি চাকুরিজীবি আজমল সোহাগ ওই ঋণের টাকা বিভিন্ন সময়ে ৩৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ফেরত দেন। কিন্তু মজিবর রহমান মাঝি ও তার বড় ছেলে মানিক মাঝি তাদের মালিকানা ও ঋণ বাবদ নেওয়া বাদবাকি টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
আরিফ ফিলিং স্টেশনের মালিকানা মো. হারুন অর রশিদ বেপারী, কন্যা সুমাইয়া পপি জানান ০৩ তারিখ রোববার গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আরা মৌরী ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাজিব হোসেন উপজেলা কক্ষে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে এ বিষয়ে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মূল মালিক হারুন অর রশিদ ও তার মেয়ে মোসাম্মাত পপি আক্তারকে পাম্প বুঝিয়ে দেন। এবং হীরা মাঝি ও তার ভাই মানিক মাঝি গং এই সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে মেসার্স আরিফ ফিলিং স্টেশন নামের পেট্রোল পাম্পের মালিকানা দাবি করে কোনো প্রকার ওজর বা আপত্তি করতে পারবেন না বলে নির্দেশনা দেন।