Menu Close

শিশু সাফওয়ান শিকদার হত্যা মামলায় আসামিদের ঘর পুড়িয়ে দিল গ্রামবাসী

Villagers burn down houses of accused in child safwan sikder murder case

বরিশালের গৌরনদীতে শিশু সাফওয়ান শিকদার (৫) হত্যা মামলার গ্রেফতার হওয়া দুই আসামির বসতবাড়ি (দালান) বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। শিশু সাফওয়ানের জানাজায় অংশগ্রহণকারীরা হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে জানাজার আগে শরিকল ইউনিয়নের মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের আসামি মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বাড়ি এবং জানাজার পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান আসামি রোমান চৌধুরীর বসতবাড়িতে আগুন লাগানো হয়। এতে উভয় আসামির বাড়ির মালামাল সম্পূর্ণ পুড়ে যায় এবং দালানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। স্থানীয়দের ধারণা অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সাফওয়ান শিকদার হত্যা ঘটনার পটভূমি ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ:

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যানুসারে, শুক্রবার দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু সাফওয়ানের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। লাশটি বাড়িতে পৌঁছালে স্বজনদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। জানাজা শেষে উত্তেজিত জনতা হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে এবং দুই আসামির ঘরে আগুন দেয়।

গৌরনদী ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসী তাদের বাধা দেয়। পরে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু আব্দুল্লাহ খান, এসিল্যান্ড মো. রাজীব হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন সুলতানা রাখী, ওসি মো. ইউনুস মিয়াসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

গ্রেফতার ও মামলার অগ্রগতি:
শিশু সাফওয়ানের বাবা মো. ইমরান শিকদার বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৯-১০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি রোমান চৌধুরী, তার স্ত্রী আখি বেগম, বোন রাবিনা বেগম ওরফে লাবিনা বেগম এবং ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত ৪ আসামিকে বরিশাল সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।

প্রেক্ষাপট:
গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকা থেকে দাদাবাড়ি বেড়াতে এসে শিশু সাফওয়ান খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। ১৬ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ভোরে একই গ্রামের মান্না বেপারীর বাড়ির কাছে রাস্তার ঢাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশের বক্তব্য:

গৌরনদী থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া বলেন, উত্তেজিত জনতা শিশু হত্যার বিচারের দাবিতে দুই আসামির ঘরে আগুন দিয়েছে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মামলার তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত জানানো সম্ভব নয়।
শিশু সাফওয়ানের নির্মম হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী ঘটনায় গ্রামবাসীর ক্ষোভ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

Related Posts