গৌরনদী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার পর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিফাত আরা মৌরির হস্তক্ষেপে বুধবার সেগুলো পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার সকালে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের একটি অংশ ইউপি চেয়ারম্যানদের অপসারণের দাবিতে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ইউএনও কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
সরিকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ফারুক হোসেন মোল্লা জানান, শতাধিক মানুষ এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের করে দিয়ে অফিসে তালা লাগিয়ে দেয়। বিষয়টি ইউএনওকে জানালে তিনি তালা খোলার ব্যবস্থা নেন। একই মন্তব্য করেন খাঞ্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুর আলম সেরনিয়াবাত। তবে নিরাপত্তার অভাবে কেউ কেউ অফিসে উপস্থিত হননি বলে জানা গেছে।
বার্থী ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য জানান, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিষদ খুললেও আতঙ্কের কারণে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না। মাহিলাড়া ইউনিয়নেও একই অবস্থা বিরাজ করছে।
অন্যদিকে, জেলা বিএনপির সদস্য এস. এম. মনিরুজ্জামান দাবি করেন, তারা কেবল চেয়ারম্যানদের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি দিয়েছেন, তবে পরিষদে তালা দেওয়ার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখতেই জনগণ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।”
জেলা বিএনপির আরেক নেতা ও চাঁদশী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তাইফুর রহমান কচি জানান, ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছাত্রদল নেতা হত্যার মামলায় আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে ওই পদে একজন প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউএনও রিফাত আরা মৌরি বলেন, “তালাবদ্ধ ইউনিয়ন পরিষদগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের অপসারণ দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হলেও, সরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা বা তালাবদ্ধ করাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”