বরিশালের গৌরনদীতে ৫ আগস্টের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির দু’টি গ্রুপের মধ্যে দাওয়াত না দেওয়াকে কেন্দ্র করে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় এক যুবক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রবিবার (২৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড এবং বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন অডিটোরিয়ামে এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী নেতাকর্মীরা জানান, অডিটোরিয়ামে ৫ আগস্টের কর্মসূচি ঘিরে উপজেলা বিএনপির একটি প্রস্তুতি সভা চলছিল। সভা চলাকালীন সময়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লবের মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। সেই ফোনালাপে তাকে দাওয়াত না পাওয়ার বিষয়ে তর্কবিতর্ক করতে শোনা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী জামান শরীফ জানান, ফোনালাপের কিছুক্ষণ পরেই উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বদিউজ্জামান মিন্টু তার কয়েকজন অনুসারীসহ লাঠিসোঁটা, রামদা, হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সভাস্থলে প্রবেশ করেন। তিনি সরাসরি সরোয়ার আলম বিপ্লবের কাছে জানতে চান, কেন তাকে সভায় দাওয়াত দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি শান্ত করতে সদস্য সচিব শরীফ জহির সাজ্জাদ হান্নান এগিয়ে এলে মিন্টু ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধাক্কা দেন। এতে সভাস্থলে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জসিম বলেন, কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে বদিউজ্জামান মিন্টুর অনুসারীরা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর শুরু করেন এবং সভাস্থলে উপস্থিত নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়, যা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সংঘর্ষে রমজান নামে এক যুবক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফ জহির সাজ্জাদ হান্নান বলেন, “আহত রমজান ছাত্রলীগের কর্মী। বড় দলের মধ্যে নেতাকর্মীদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। তবে সভার পরিবেশ নষ্ট হওয়াটা দুঃখজনক ঘটনা।”
অন্যদিকে, বদিউজ্জামান মিন্টু তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতিতে আছি। এ দীর্ঘ সময়ে আমি বহুবার হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় আমাকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। আমি শুধু এর কারণ জানতে গিয়েছিলাম। সেখানে কোনো বিশৃঙ্খলা বা ভাঙচুরে আমি বা আমার লোকজন জড়িত ছিলাম না।”
তবে এই ঘটনা নিয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লব সাংবাদিকদের সাথে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তারিকুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।