পনির আর মাংসে যে চর্বি থাকে, তা কেবল পুরুষদের স্থূলতাই বাড়ায় না, শুক্রাণু কমিয়ে পুরুষত্বেরও ক্ষতি করে। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত গবেষণামূলক নিবন্ধের বরাত দিয়ে আজ সোমবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।
নিবন্ধের তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি ডেনমার্কের একদল গবেষক তাঁদের সাম্প্রতিক এক গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে দাবি করেছেন, পনির ও মাংসের অতিরিক্ত চর্বি পুরুষদের শুক্রাণুর ঘনত্ব কমিয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন পূর্ণবয়স্ক ডেনিশ পুরুষের শুক্রাণুর ঘনত্ব মোটামুটি চর্বি খাওয়া একজন পুরুষের চেয়ে ৩৮ শতাংশ কম। এ ছাড়া সবচেয়ে কম চর্বি খাওয়া একজন পুরুষের শুক্রাণুর ঘনত্ব বেশি চর্বি খাওয়া একজন পুরুষের শুক্রাণুর চেয়ে ৪১ শতাংশ বেশি।
এই গবেষণাপত্রের অন্যতম লেখক টিনা জেনসেন বলেন, ‘ব্যাপারটি মোটেও হেলাফেলা করার মতো বিষয় নয়। আমরা জানি যে পনির ও মাংসের চর্বি মানুষের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে। এটি পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।’
খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে যে পুরুষের শুক্রাণুর মান সম্পর্কযুক্ত—ব্যাপারটি অতীতে অনেকবারই গবেষণার বিষয় হয়েছে। ২০১১ সালে ব্রাজিলে একই ধরনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষ গম, বার্লি ইত্যাদি বেশি খান, তাদের শুক্রাণুর ঘনত্ব বেশি। একই ধরনের আরেক গবেষণায় গবেষকেরা দেখিয়েছেন, ফলাহারি পুরুষদের শুক্রাণুর মান ফল কম খাওয়াদের চেয়ে অনেক উন্নত।
ডেনমার্কের সর্বশেষ গবেষণায় কমপক্ষে ২০ বছর বয়সী ৭০১ জন পুরুষের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। এসব তরুণ ২০০৮ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
গবেষণার সময় এই ৭০১ জনের তাঁদের শেষ তিন মাসের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে তাঁদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়। চারটি পর্যায়ে গবেষকেরা এই গবেষণাটির ফল প্রকাশ করেন।
গবেষণায় অবশ্য চর্বি খাওয়ার বাইরে মানুষের দৈনন্দিন জীবনাচার বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। টিনা জেনসেনের মতে, বিশ্বজুড়ে পুরুষের শুক্রাণুর ঘনত্ব কমে যাওয়া নিয়ে যে বিভিন্ন গবেষণা চলছে, তাঁদের গবেষণাটি এ ক্ষেত্রে আংশিক ধারণা দিতে সক্ষম।