নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ২১টির মধ্যে ১৮টি হাট-বাজার গুছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাগিয়ে নিয়েছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতারা। ক্রেতাদের ২৫২টি দরপত্র ফরম গুছের মাধ্যমে মাত্র ৪০টি দরপত্র ফরম জমা পড়ায় সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ২১টি হাট বাজার ১৪২০ সনের ইজারা দেয়ার জন্য গত ৫ ফেব্র“য়ারি দরপত্র আহ্বান করে ইউএনও। গত ৬ মার্চ দরপত্র ফরম বিক্রির শেষ দিনে ভূরঘাটা হাটের জন্য ৮টি, বাকাই হাটের ১১টি, বার্থী হাটের ১৬টি, বাটাজোর হাটের ২২টি, বাটাজোর বাজারের ২১টি, চাঁদশী হাটের ২০টি, মাহিলাড়া হাটের ১৫টি, বিল্লগ্রাম হাটের ৩২টি, নলচিড়া হাটের ১৫টি, পিঙ্গলাকাঠি হাটের ১২টি, পিঙ্গলাকাঠী লঞ্চঘাটে ৫টি, সরিকল হাটের ১১টি দরপত্র ফরমসহ ২১টি হাট-বাজারের অনুকূলে ২৫২টি দরপত্র ফরম বিক্রি হয়। গত ৭ মার্চ দরপত্র ফরম দাখিলের শেষদিনে ১৩টি হাট-বাজারে ২/১টি করে ২২টি দরপত্র জমা পরে। বাকি মাহিলাড়া হাটের ৩টি, বিল্লগ্রাম হাটের ৩টি, বাটাজোর হাটের ৩টি, সরিকল হাটের ৩টি, ভূরঘাটা হাটের ৩টিসহ মোট ছয়টি হাট-বাজারে ১৮টি দরপত্র জমা পড়েছে। ২১টি হাট-বাজারের মধ্যে ১৯টি হাট-বাজারে ৪০টি দরপত্র জমা পড়েছে। একমাত্র মিয়ারচর হাট ও সুরেন সিকদারের হাটে কোন দরপত্র জমা পরেনি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী আ’লীগ নেতা দরপত্র ক্রেতাদের গুছ করে ভূরঘাটা হাট, সরিকল হাট, বাকাই হাট, বার্থী হাট, বাটাজোর হাট, বাটাজোর বাজার, চাঁদশী হাট, নলচিড়া হাটসহ ১৮টি হাট বাজার গুছ করে বাগিয়ে নিয়েছে। বাকাই হাট খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মতলেব মাতুব্বর, ভূরঘাটা হাট ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম, বাটাজোর হাট বাটাজোর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আব্দুর রব হাওলাদার, বাটাজোর বাজার ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য উৎপল চক্রবর্তী, মাহিলাড়া হাট মাহিলাড়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আলমগীর কবিরাজ, বার্থী হাট বার্থী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা মাইটি সরদার, নলচিড়া হাট ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা দুলাল খানসহ আ’লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের ১৮ জন নেতা-কর্মীর নামে গুছ করে দেয়া হয়। বাকি বিল্লগ্রাম হাটের ২/১ জন দরপত্র ক্রেতাকে গুছ করতে না পারায় ১৪১৯ সনের তুলনায় ১৪২০ সনের জন্য আড়াই গুণ বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে। এ নিয়ে সাধারন ক্রেতাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, ক্রেতাদের সুবিধার্থে দরপত্র বিক্রির দিন থেকেই অফিসের সামনে দরপত্র ফেলার বাক্স রাখা হয়েছিলো। ওই বাক্সে ক্রেতাদের দরপত্র ফরম ফেলার (জমা দেয়ার) ব্যবস্থাও করা হয়েছিলো। গুছের ব্যাপারে দরপত্র ক্রেতাদের কোন অভিযোগ আমরা পাইনি। বাহিরে বসে কোন হাট-বাজার গুছ হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।