মাহিলাড়ায় শপথ নিলো হাজারো মানুষ – নতুন সূর্য শিখা জ্বলবেই জনতার সংগ্রাম চলবেই

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ জাতীয় পতাকা ও শহীদ মিনার অবমাননা এবং মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় ঘোষণাসহ তা কার্যকর, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছে হাজার-হাজার মানুষ। মঙ্গলবার সকালে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়ন প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে শপথ গ্রহন এবং ঘৃণা প্রতিবাদ র‌্যালীতে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার সর্বস্তরের হাজার-হাজার জনতা, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বপক্ষের শক্তি, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ তরুন প্রজন্ম স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহন করেন।

বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদীর মাহিলাড়া ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে সকাল এগারোটায় ঘৃণা ও প্রতিবাদ র‌্যালী বের করে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়। ঘন্টাব্যাপী র‌্যালী ও মিছিল শেষে মাহিলাড়া ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে শপথ বাক্য পাঠ করান দশম শ্রেনীর ছাত্রী পাপরী মন্ডল। শহীদ মিনারের বেদীতে দাঁড়িয়ে মুষ্টিবদ্ধ ডান হাত উঠিয়ে মাহিলাড়া এ.এন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী পাপরী মন্ডলের দিপ্ত কন্ঠে উচ্চারিত হয় “আমরা শপথ করছি যে, সকল যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির রায় ঘোষণা ও তা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম চলবেই। যুদ্ধাপরাধী ও দেশবিরোধী সংগঠন জামায়াত এবং তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবো। যুদ্ধাপরাধীদের সকল অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ তাদের গণমাধ্যমগুলোকে বয়কট করবো। মাহিলাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়িয়ে আমরা যে শপথ নিয়েছি, সেটা বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে আমাদের মূল লক্ষ্য। সবশেষে পাপরী তার বজ্র কন্ঠে বলেন, আমাদের শপথের প্রদীপ্ত স্বাক্ষরে নতুন সূর্যশিখা জ্বলবেই-জনতার সংগ্রাম চলবেই”। শেষে জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে শপথ শেষ করা হয়।

শপথ গ্রহন ও ঘৃণা প্রতিবাদ র‌্যালীর পূর্বে মাহিলাড়া শহীদ মিনারের পাদদেশে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম সংসদ কমিটির উপজেলা শাখার আহবায়ক, প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন গৌরনদী উপজেলা পরিষদের ভাইসচেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, অধ্যক্ষ ফিরোজ ফোরকান আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইসাহাক আলী সরদার, গৌরনদী থানার ওসি আবুল কালাম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন, সমাজ সেবক আলমগীর হোসেন কবিরাজ, আবুল কালাম সিকদার, আবুল মোল্লা, আঃ রব হাওলাদার, ইউনুস মোল্লা, আতাউর রহমান কিসলু, সালাউদ্দিন লালু, মজিবর রহমান প্যাদা, শাওন প্রমুখ। জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাস ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে গঠিত মাহিলাড়া ইউনিয়ন প্রতিরোধ কমিটি এ কর্মসূচীর আয়োজন করলেও সর্বস্তরের জনতার উক্ত অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহনের মাধ্যমে পুরো মাহিলাড়া হয়েছিলো যেন আরেকটি শাহবাগ।