নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ “মা লোকমান আমাকে বাঁচতে দিলো না”। নিহত ঝুমুরের লেখা এমন চিঠি উদ্ধারের পর তার মৃত্যুর রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। প্রেমিক লোকমান কর্তৃক প্রেমিকা এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার অভিযোগ সংক্রান্ত সংবাদ গতকাল শনিবার বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশের পর অবশেষে টনক নড়েছে পুলিশ প্রশাসনের। শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার মোল্লাপাড়া গ্রাম পরিদর্শন করেছেন পুলিশের গৌরনদী সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান, আগৈলঝাড়া থানার ওসি মোঃ সাজ্জাদ হোসেন। অবশেষে হত্যার ঘটনার ১৫ দিন পর নিহত ঝুমুরের ভাই সহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে শনিবার সন্ধ্যায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এজাহারে প্রকাশ, ওই গ্রামের আব্দুস জব্বার হাওলাদারের কন্যা ঝুমুর আক্তার উজিরপুর উপজেলার জল্লা আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। ঝুমুরের সাথে একই গ্রামের মৃত আকবর আলী হাওলাদারের পুত্র লোকমান হাওলাদারের দীর্ঘদিন থেকে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো। সে সুবাধে লোকমান বিয়ের প্রলোভনে ঝুমুর সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এতে ঝুমুর অন্তঃস্বত্তা হয়ে পরে। ঝুমুর অন্তঃস্বত্তার বিষয়টি প্রেমিক লোকমানকে জানিয়ে বিয়ের জন্য চাঁপ প্রয়োগ করে। এতে প্রেমিক লোকমান নানা তালবাহানা করে ঝুমুরের গর্ভপাত করানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। গত ৯ মার্চ রাতে কৌশলে গর্ভপাতের জন্য লোকমান কবিরাজী ঔষধের সাথে বিষ মিশিয়ে ঝুমুরকে খাওয়ায়। এতে ঝুমুর অসুস্থ হয়ে পরলে প্রথমে তাকে গৌরনদী ও তাৎক্ষণিক বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নেয়ার পথে ঝুমুর মারা যায়। সু-চতুর লোকমান তড়িঘড়ি করে ১০ মার্চ ঝুমুরের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাশের ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন সম্পন্ন করে। শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে নিহত ঝুমুরের লেখা দুটি চিরকুট উদ্ধারের পর মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে। এরপর থেকেই আত্মগোপন করে প্রেমিক লোকমান ও তার পরিবারের সদস্যরা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আক্কাস আলী জানান, ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আদালতের কাছে কবর থেকে লাশ তোলার জন্য আবেদন করা হবে। পরবর্তীতে লাশের ময়না তদন্তের রির্পোট পেলেই ঘটনার মুল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। আগৈলঝাড়া থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, আসামিকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের জোরপ্রচেষ্টা চলছে।