বার্থী তাঁরা মায়ের মন্দিরের বাৎসরিক পূজা

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ অশান্ত বিশ্বে আজ পারস্পারিক হানাহানি। মানব জীবন মোহময় ও অন্ধকারছন্ন। এ মোহময় অন্ধকার দূর করতে, জীবনের দুঃখ মোচন ও শান্তি অর্জনের এবং জগতের মঙ্গলার্থে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও ব্যাপক আয়োজনের মধ্যদিয়ে প্রায় সাড়ে চার’শ বছরের পুরনো দেশের একমাত্র ঐতিহ্যবাহী বার্থী তাঁরা মায়ের মন্দিরে দু’দিনব্যাপী বাৎসরিক পূজা ও গ্রামীণ মেলা শুরু হবে আগামী ৩০ মার্চ।

বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের পাশ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার বার্থী বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী বার্থী তাঁরা মায়ের মন্দিরের বাৎসরিক পূজা উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও ভারতসহ দেশের বিভিন্নস্থানের লাখো ভক্তের সমাগম ঘটবে বলে জানিয়েছেন মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দরা। ‘কে বলেছে মা আমার কালো-মা যে আমার বিশ্ব জুড়ে জ্বালিয়ে দিলো আলো, কে বলেছে মা আমার কালো’। ধর্মীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতাসহ তাঁরা মায়ের জীবনীর ওপর স্বরচিত সংগীত প্রতিযোগীতারও আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় দু’দিনব্যাপী পূজা অনুষ্ঠানে আগত ভক্তবৃন্দের নিশ্চিত নিরাপত্তা দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে গৌরনদী থানা পুলিশের সাথে মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আবুল কালাম বলেন, পুলিশ প্রসাশনের পক্ষ থেকে দু’দিনব্যাপী পূজা ও গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠানে আগত ভক্তদের কঠোর নিরাপত্তা দেয়া হবে।

ঐতিহ্যবাহী এ মন্দিরের পূজা ও গ্রামীণ মেলাকে ঘিরে প্রতিবছর গৌরনদীতে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পরে। বার্থী তাঁরা মায়ের মন্দির কমিটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত এএসপি শান্তনু ঘোষ ও সাধারন সম্পাদক প্রণব রঞ্জন বাবু দত্ত জানান, দেশের মধ্যে একমাত্র ঐতিহ্যবাহী বার্থী তাঁরা মায়ের মন্দিরটি প্রায় সাড়ে চার’শ বছরের পুরনো। ইতিহাসের আলোকে তারা আরো বলেন, বার্থী এলাকার জমিদার প্রয়াত ভুবতী কান্ত বক্শি প্রথমে তাঁরা মায়ের মন্দিরের নামে ৫৭ শতক জমি দান করেন। দেশের একমাত্র ঐহিত্যবাহী তাঁরা মায়ের মন্দিরটি গৌরনদীর বার্থী এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তারই নামানুসারে ওই এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বার্থী তাঁরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তাঁরাকুপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তাঁরাকুপি নামের একটি গ্রাম। বাংলা ১১১১ সালে বরিশালের বিখ্যাত জমিদার রাম লাল ভট্টাচার্য তাঁরা মায়ের মন্দিরের পাকা ভবন নির্মান করে দিয়েছেন। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার তাঁরা মায়ের ভক্তদের অনুদানে প্রসিদ্ধ ও সার্বজনীন এ মন্দিরটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন ধর্মরক্ষিনী সভার বরাত দিয়ে তারা আরো বলেন, বৃট্রিশ সরকারের আমলে তাঁরা মায়ের মন্দিরে সেবাইত হিসেবে ছিলেন ভগবান শ্যাননাল ও রমেশ শ্যাননাল। ১৯৮৪ ইং সাল থেকে মন্দিরের সেবাইত হিসেবে অনিল বৈদ্ধ ও সার্বক্ষনিক মন্দিরের কাজের জন্য তিন জন কর্মচারী নিয়োগ রয়েছেন। বর্তমানে মন্দিরের আধুনিকায়নের কাজ চলছে।