জীবনযুদ্ধে সংগ্রামী একজন পবিত্র মিস্ত্রি

পবিত্র মিস্ত্রী জানান, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের শৌলধর গ্রামের দিনমজুর রোমাকান্ড জয়ধরের কন্যা তিনি। পাঁচ বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী বাহাদুরপুর গ্রামের নিরাঞ্জন মিস্ত্রীর সাথে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের দাবিতে তাকে প্রায়ই শারিরিক নির্যাতন করে আসছিল। ছয় মাস যেতে না যেতেই তার গর্ভে সন্তান আসে। এরই মধ্যে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের অব্যাহত শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিয়ের ৮ মাসের মাথায় গর্ভ অবস্থায় পিত্রালয়ে আশ্রয় নেন পবিত্র মিস্ত্রী। কিছুদিন যেতে না যেতে পবিত্রর বুক জুরে একটি কন্যা সন্তান আসে। এর তিন মাস পর দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পিতা পরলোগগমন করেন। সংসারের একমাত্র উর্পাজনকারী ভাই বিকাশ জয়ধরকে (২৫) দুই বছর পূর্বে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। ভাইয়ের মৃত্যুর পর পবিত্র ও তার বৃদ্ধা মা বিভুতি জয়ধর চোখে দেখেন শুধু অন্ধকার। তার পরেও পবিত্র ভেঙ্গে পরেননি। কারো অনুকস্পা অনুগ্রহের প্রত্যাশায় হাত পাতেননি। বরং শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে সংসারের হাল ধরেছেন শক্ত হাতে। পবিত্র মিস্ত্রী বলেন, কষ্টের কথা কইলে কি মানুষ ভাত দেবে। বরং মানুষ দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মোর দেহ ভোগ করতে চাইবে। তাই মানুষের জমিতে কামলা দিতে শুরু করলাম। বর্ষার সময় কাম কম থাকায় বিল হইতে শাপলা উঠাইয়া (তুলে) বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করি। গড়ে প্রতিদিন ১’শ থেকে ১৫০ টাকা উর্পাজন করি। তাতে তিন সদস্যর সংসার ভাল ভাবে চইল্লা যায়। তার একমাত্র সাড়ে তিন বছরে কন্যা সন্তান কাকলীকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করারও স্বপ্ন দেখছেন তিনি।