যৌতুক : দিনমজুরের কন্যাকে বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে

প্রায় ৩ মাস ধরে অসহায় গৃহবধূ তার দিনমজুর বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে গৃহবধূ শিল্পী বেগম স্থানীয় প্রসাশনসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ঘটনাটি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বসুন্ডা গ্রামের।

গৌরনদী উপজেলার বড়কসবা গ্রামের দিনমজুর শাহজাহান হাওলাদারের কন্যা শিল্পী বেগমের দেয়া অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বসুন্ডা গ্রামের সোনামদ্দিন ফকিরের পুত্র রুবেল ফকিরের সাথে শিল্পী বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ব্যবসার কথা বলে যৌতুকলোভী রুবেল ফকির শিল্পীর দিনমজুর পিতার কাছে দেড়লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুকের টাকার জন্য রুবেল ও তার পরিবারের অব্যাহত চাপের মুখে দিনমজুর শাহজাহান হাওলাদার ধারদেনা করে যৌতুকের ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বছর যেতে না যেতেই যৌতুকলোভী রুবেল ও তার পরিবারের লোকজনে পূর্ণরায় ১ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। এতে শিল্পী বেগম বাঁধা দেয়ায় রুবেল ও তার পরিবারের লোকজনে প্রায়ই তাকে (গৃহবধূ শিল্পী বেগমকে) শারিরিক ভাবে নির্যাতন করতো। একপর্যায়ে চলতি বছরের ৩ মার্চ রুবেল ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের দাবিকৃত টাকার জন্য গৃহবধূ শিল্পী বেগমকে অমানুষিক নির্যাতন করে তার বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় গৃহবধূ শিল্পী বেগম বাদি হয়ে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে যৌতুক বিরোধী আইনে ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ মামলার প্রধান আসামি রুবেল ফকিরকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরন করে।

সূত্রে আরো জানা গেছে, আদালতে রুবেল ও তার পিতা সোনামদ্দিন ফকির যৌতুকের জন্য গৃহবধূ শিল্পী বেগমকে আর চাপ প্রয়োগ করবেন না বলে মুচলেকা দেয়ার পর বিচারক গ্রেফতারকৃত রুবেল ফকিরের জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর রুবেল ও তার পিতা গৃহবধূ শিল্পী বেগমকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। কয়েকদিন যেতে না যেতেই মামলা দায়ের করায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৪ জুলাই পূর্ণরায় গৃহবধূ শিল্পী বেগমের ওপর রুবেল ও তার পরিবারের সদস্যরা নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতনের একপর্যায়ে শিল্পীকে তার পিত্রালয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়। ওই ঘটনায় পূর্ণরায় শিল্পী বেগম বাদি হয়ে ৬ জনকে আসামি করে আগৈলঝাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। শিল্পী বেগম অভিযোগ করে বলেন, মামলা থেকে রেহাই পেতে রুবেল ফকির ও তার পরিবারের লোকজনে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মামলা উত্তোলনের জন্য উল্টো আমাকে নানাধরনের ভয়ভিতীসহ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। তাদের অব্যাহত হুমকির মুখে গৃহবধূ শিল্পী বেগম চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও উলে¬খ করেন। অসহায় গৃহবধূ শিল্পী বেগম তার স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে প্রসাশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।