প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ও দুর্নীতি করে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূয়া তালিকা ও বরাদ্দকৃত উপবৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীদের কম দিয়ে উপবৃত্তি’র ২০ সহস্রাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একসভায় ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ২০১০ সালের জন্য গৌরনদী উপজেলার চন্দ্রহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত ৩০৩ জন  দরিদ্র ও দুস্থ শিক্ষার্থী  উপবৃত্তি টাকা পেয়ে আসছিল। এপ্রিল, মে, জুন মাসের  উপবৃত্তি প্রাপ্তির জন্য ২৮৪ জন শিক্ষার্থীর নামের তালিকা তৈরি করে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশ্রাব মাহামুদ হিরু। বিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী ৩০০ টাকা করে ২৪১ জন ও ১০০ টাকা করে ৪৩ জন শিক্ষার্থী মোট ৭৬ হাজার ৬০০ টাকা উপবৃত্তি পাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। ওই উপবৃত্তির টাকা বিতরনের জন্য গৌরনদী বন্দরস্থ অগ্রনী ব্যাংকের অফিসার কালিপদ ৩১ জুলাই চন্দ্রহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। ব্যাংকের অফিসার এপ্রিল, মে, জুন মাসের উপবৃত্তির ৭৬ হাজার ৬০০ টাকা ২৮৪ জন  শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরনের জন্য প্রধান শিক্ষক হিরুকে দায়িত্ব দিয়ে সে লাইব্রেরীতে বসে থাকেন। এ দিকে ওই তিন মাসের বরাদ্দকৃত উপবৃত্তি’র ৩০০ টাকার স্থলে প্রথম শ্রেনীর নাজমুল, তৃতীয় শ্রেনীর লিমন সরদার, তারেক সরদার, তানিয়া, মরিয়ম, রেজাউল নাজমুল, লিমা আক্তার, রিতু, চতুর্থ শ্রেনীর রুপা অক্তার, আখি আক্তার, ঝুমুর, সুমন, পঞ্চম শ্রেনীর সাগরকেসহ শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে ২০০ টাকা করে  বিতরন করেন। উপবৃত্তি প্রাপ্ত দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীদের  ১০০ টাকা করে কম দিয়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভূয়া তালিকায় তৃতীয় শ্রেনীর আরিফ খলিফা, আশিফ বেপারী’র নামে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পঞ্চম শ্রেনীর তারানা ইসলাম সেতু ও তার ছোট বোন দ্বিতীয় শ্রেনীর মুনমুন আক্তার মিতুকে যৌথ কার্ড না দিয়ে তাদের পৃথক পৃথক কার্ড করে একজনের টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের একাধিক সহকারী শিক্ষক জানান, বিভিন্ন অজুহাত ও প্রতারনার মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক হিরু উপবৃত্তি প্রাপ্ত ২ শতাধিক শিক্ষার্থীকে ১০০ টাকা করে কম দিয়ে ২০ সহস্রাধিক টাকা আত্মসাত করেছে। প্রধান শিক্ষক বিরুদ্ধে উপবৃত্তি’র টাকা আত্মসাতের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শাহে আলম শেখ,  নিতাই চন্দ্র জানান, সংশ্লিষ্ট  উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করলে থলের বেড়াল বেড়িয়ে আসবে।

উল্লে¬খিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে প্রধান শিক্ষক মোঃ আশ্রাব মাহামুদ হিরু জানান, বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্টের ব্যয় বহনের জন্য উপবৃত্তি’র ১০০ টাকা করে ১৫/২০ জন শিক্ষার্থীকে  কম দেয়া হয়। উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহে-আলম খান জানান, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিনি এ পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাননি।