আর কতদিন? কত বছর?? কত যুগ??? – ওয়াচডগ

৩৯টা বছর ধরে আমরা অসহায়ের মত দেখছি বাংলাদেশকে লুটছে একদল লুটেরা। পরিবারের নামে, পিতার নামে, ঘোষকের নামে, নেতা-নেত্রীর নামে ১৭ কোটি মানুষকে শৃঙ্খলিত করা হয়েছে লুটপাটতন্ত্রে। ছাত্র, শিক্ষক, আমলা, বিচারক, উকিল, বুদ্ধিজীবী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার সহ সমাজের শিক্ষিত অংশের সামনে উচ্ছিষ্ট বিছিয়ে তাদের ঠেলে দেয়া হচ্ছে পঙ্কিলতার গভীরে। আর এই উচ্ছিষ্টের আড়ালে চলছে নজিরবিহীন হরিলুট। লুটপাটের আধিপত্য নিয়ে দুই পরিবারের লড়াইকে বলা হচ্ছে রাজনীতি, আর এ রাজনীতির গ্যাঁড়াকলে জনগণকে বানানো হচ্ছে দলের, দল হয়ে যাচ্ছে নেত্রীর, দেশ হয়ে যাচ্ছে পরিবারের। ১ টাকায় কয়েক শ কোটি টাকার সম্পদ হাতড়ানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতা হতে ঈদকে পর্যন্ত রেহাই দেয়া হল না। ক্ষমতাসীন দল সূক্ষ্ম হিসাব কষেই উচ্ছেদের দিন হিসাবে ঈদকে বেছে নিয়েছিল। তাদের জানা ছিল উচ্ছেদের জবাব হিসাবে বিরোধী দলকে হরতাল ডাকতেই হবে। আর এ হরতাল ঘরমুখো লাখ লাখ মানুষের জন্যে বয়ে আনবে সীমাহীন দুর্ভোগ। এমনটাই আমাদের রাজনৈতিক সমীকরণ। এসব সমীকরণের ঘোলা পানিতে ক্ষমতা নামের সোনার মাছ শিকার করে নেত্রীরা নিজে এবং পরিবারের জন্যে নিশ্চিত করেছেন হাজার বছরের নিশ্চয়তা।

প্রশ্ন হচ্ছে, আর কত? আর কত মূল্য দিতে হবে শেখ মুজিব আর জেনারেল জিয়াকে মূল্যায়নের? জাতির বুকে চেপে বসা নেত্রী নামের এসব মাফিয়াচক্রদের আর কতকাল আমাদের লালন করতে হবে? ১ টাকায় কয়েকশ কোটি টাকার গণভবন আর সেনাভবন দিয়েও যদি পরিত্রাণ পাওয়া যায় এসব আবর্জনা হতে আমাদের বোধহয় উচিৎ হবে তা মেনে নেয়া। যে ভাষায় আমাদের রাজনীতি কথা বলছে এ ভাষা একবিংশ শতাব্দীর ভাষা হতে পারে না, এ পাথর যুগের ভাষা যা দিয়ে মানুষ টিকে থাকার লড়াই করত।

আমরা বোধহয় ভুলে গেছি রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য হল দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ সুসংহত করে তাতে আইনের শাসন নিশ্চিত করা, স্বাভাবিক জন্ম-মৃত্যুর অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। হাসিনা-খালেদার রাজনীতি কি এসব বাধ্যবাধকতা হতে মুক্ত? শেখ মুজিব আর জেনারেল জিয়াকে সন্মান আর ভালবাসার মূল্য কি জাতিকে এভাবেই যুগ যুগ ধরে পরিশোধ করতে হবে?