পাশে এগিয়ে যাওয়া একজন সুনাগরিক এর কর্তব্য । তবে এই কাজ করা জন্য থাকে হবে আন্তরিকতা এবং ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা ধারনা । ডাক্তার আসার আগে আহত কোন ব্যক্তিকে আরোগ্যের পথ সুগম করা ও যাতে অবস্থার অবনতি না ঘটে তার ব্যবস্থা করাকে ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা বলে । কোন আহত ব্যক্তিকে ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সময় আপনাকে কিছু বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে যেমন
- ব্যক্তি কি কারনে আহত হয়েছে ।
- কতটুকু প্রাথমিক চিকিৎসা তার প্রয়োজন ।
- এবং দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়া ।
এবার আসি আজকে আমি বৈদ্যুতিক Shock খেলে সাপ দংশন এবং আগুন পুড়লে ফার্স্ট এইড প্রাথমিক চিকিৎসা ।
বৈদ্যুতিক Shock এর ফার্স্ট এইডবা প্রাথমিক চিকিৎসা
বিদ্যুৎ প্রবাহ আছে এমন কোন খোলা তারের সংস্পর্শে এলে যেকোন ব্যক্তি এর দেহে বিদ্যুতায়ন হয়ে অনেক বড় আঘাত সৃস্টি করে । যার ফলে সেই ব্যক্তির আহত হয় বা তার মৃত্যু হয় । আর এই রকম ঘটনা এখন অনেক বেরে গেছে । আর এই ঘটনা গুলো সংগঠিত হয়ার প্রধান কারন অবহেলা বা অসাবধানতা ।
এ ধরনের ঘটনা হলে আপনার সামনে সংঠিত হলে আপনি কি করবেন ? হ্যা এ সময় ঘাবরে না গিয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে আপনার উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে সেই দুর্ঘটনা কবলিত ব্যক্তি আপনি রক্ষা করতে পারেন । বিদ্যুতায়ন হয়া ব্যক্তিকে রক্ষার করার লক্ষ্যে প্রথমেই আপনাকে মেইন সুইচ খুজে বের করতে হবে এবং সুইজ অফ করতে হবে মেইন সুইজ পাওয়া না গেলে কোন শুকনো লাঠি দিয়ে বা কোন শুকনো কাঠ দিয়ে ধাক্কা দিয়ে তার হয়ে ব্যক্তিকে তার হতে বিছিন্ন করুন অথবা আপনার আশেপাশে কোন রাবারের গ্লাভস বা জুতা থাকলে তা পরে তা দিয়ে ধাক্কা দিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত ব্যক্তি তার হতে বিছিন্ন করুন করুন ।
এবং এ সময় একটা জিনিস লক্ষ্য রাখবেন আপনি কখন খালি হাতে বিদ্যুতায়ন হয়া ব্যক্তিকে স্পর্শ করবে না , যদি করে এতে আপনাকে দেহে বিদ্যুতায়ন হয়ে যাবে । এ সময় নিচের ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা গুলো দিতে ভুলবেন না যথা ,
- বিদ্যুতায়ন ব্যক্তির শাস প্রশাস সাভাবিক না হয়া পর্যন্ত কৃতিম শাস প্রশাস প্রক্রিয়া চালু রাখতে হবে ।
- গলা , বুক ও কোমরের কাপড় আলগা করে দিতে হবে ।
- যেই স্থান পোড়া গেছে তাতে জরুরী চিকিৎসা দিতে হবে ।
- স্নায়বিক আঘাতের চিকিৎসা চালাতে হবে , এবং
- যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে নিতে হবে বা হাসপাতালে নিতে হবে ।
আর বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্ক গুলো দেখতে পারেন
সাপ দংশন করলে ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা কি হবে ?
সাপ প্রকৃতপক্ষে মানুষ শিকার করে না এবং সাপকে কোনো কারণে উত্তেজিত করা না হলে বা সাপ আঘাতগ্রস্থ না হলে তারা মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলে। মানুষ যত টা সাপ কে ভয় খায় ঠিক ততটাই সাপ মানুষ কে ভয় খায় । ব্যাতিক্রম ছাড়া কনস্ট্রিক্টর ও বিষহীন সাপগুলো মানুষের জন্য কোনো হুমকি নয়। বিষহীন সাপের কামড় মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়, কারণ তাদের দাঁত মূলত কোন কিছু আঁকড়ে ধরা ও ধরে রাখার মতো।
বিষধর সাপ দংশনের লক্ষণগুলো হচ্ছে বমি, মাথাঘোরা, কামড়ানোর স্খানে ফোলা, রক্তচাপ কমে যাওয়া, চোখে ডাবল দেখা , ঘাড়ের মাংসপেশী অবশ হয়ে ঘাড় পেছনের দিকে হেলে পড়া , আর কাটা দাগ থেকেও আপনি বুঝতে পারবেন দংশন করা সাপ টি বিষধর না যদি সাপের কামড়ানো জায়গায় প্রায় এক ইঞ্চি ব্যবধানে দাতের চিহ্ন দেখা যায় , মাঝে মাঝে কাটা স্থান অনেক স্পস্ট হয় , এরকম হলে আপনাকে বুঝে নিতে হবে কোন বিষধর সাপ দংশন করেছে । আর যদি কামড়ের দাগ অধিক বা খাড়া বা অধিক চন্দ্রাকার হয় তবে এই সাপ টা বিষধর নয় । সাপ দংশন করার পর আপনার ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা কি হবে তা নিন্মে আলোচনা করা হল ।
- প্রথমেই যে স্থানে দংশন করে ছে তা খুজে বেড় করা এবং তার শিরার রক্ত চলাচল বন্ধ করতে হবে ।
- পায়ে কামড় দিলে প্রথমেই উরুর মাঝামাঝি স্থানে একটি বাঁধন দিতে হবে এবং তারপর তার নিচের দিকে অর্থাৎ হাটুর একটু উপরেই আরেকটি বাঁধন দিতে হবে ।
- ৩০/৩৫ মিঃ পরপর বাঁধন গুলো ৩০ সেকেন্ট এর মত আলগা করে দিয়ে আবার শক্ত করে বাঁধন দিতে হবে । তবে এই সময় একটা জিনিস মনে রাখবেন বাঁধন গুলো যেন শিরার রক্ত চলাচল বন্ধ করে ধমনীর না । মানে বিষ যেন রক্তের সাথে মিশে যেতে না পারে ।
- নিশাস বন্ধ হয়ে গেলে কৃত্রিম উপায় শাস-প্রশাস আনার চেস্টা করতে হবে ।
- রোগী কে গরম রাখার জন্য চা , কফি খায়াতে হবে । কোন ভাবেই বিশ্রাম করতে দেয়া যাবে না ।
- কামড়ের জায়গা ধারালো ব্লেড দিয়ে যোগ চিহ্নের মত করে ৩/৪” ইঞ্চি পরিমান গভির করে করে কেটে তাতে পটাশিয়াম পারমাংগানেটের গুরা দিয়ে দিতে হবে। তবে হাত বা পা বাদে দেহের অন্য জায়গায় কামড় দিলে ডাক্তার কাছে না নেয়া পযন্ত কোন যায়গা কাটা যাবে না , তবে এই ক্ষেত্রে উপরের কাজ গুলো করা যাবে।
আর বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্ক গুলো দেখতে পারেন
আগুন পুড়লে ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা কি হবে ?
আগুনে যে ভাবেই দাহ হোক না কেন প্রতিক্রিয়া একই হয়। যে জায়গায় পুড়ে যায় সেখানে অনেক জালা করে , পুড়ে যাওয়া স্থান লাল হয়ে যায় , ফোস্কা পড়ে , এর ফলে আমাদের দেহে যে তন্তু গুলো আছে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয় । এ সময় ভীষন মাথা ব্যাথা হয় । তাই এ সময় আহত ব্যাক্তির জরুরী ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলে অনেক টা আরাম অনুভব করে । আগুনে পুড়ে যাওয়া ব্যক্তিকে নিচের ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে ভুলবেন না ।
- রোগী কে বেশী নরাচরা করতে দেওয়া যাবে না । এজন্য রোগী যাতে বেশি নরাচরা করতে না পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে ।
- দগ্ধ কাপর গায়ে লেগে থাকলে খুলে ফেলা যাবে না এবং কোন ফোস্কা লাগা যাবে না।
- সম্পূর্ন জীবানু মুক্ত শুকনো ড্রেসিং দিয়ে ক্ষত স্থান ঢেকে দিতে হবে ।
- যদি হাতের কাছে কোন ড্রেসিং পাওয়া না যায় , তবে শুকনো কোন পরিষ্কার ও পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে ।
- ক্ষত এর পরিমান অল্প হলে ঠান্ডা পানি ঢালতে থাকুন ।
- যদি ফোস্কা পরে তা হলে খুবেই আলগা ভাবে বাধতে হবে ।
আর বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্ক গুলো দেখতে পারেন
আমি আপনাদের আমার সীমিত জ্ঞানে ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারনা আছে তা শেয়ার করার চেস্টা করলাম। ধন্যবাদ
লেখক : ফাহিম রেজা বাঁধন
সূত্র: BdTutorial24.com