হযরত শাহ সফি পাগলা নামের এক ভন্ড ফকিরের আর্বিভাবে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে শত শত লোক সফি পাগলার কাছে রোগ নিরাময়ের জন্য ভীড় করছেন। এ ভন্ড ফকির কৌশলে রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অপরদিকে রাতে খাসি জবাই করে তবারক তৈরী করে বিতরন করা হচ্ছে। তবারক খেয়ে অনেক লোকের রোগ মুক্তি হয়েছে বলে একটি মহল জোরেশোরে গুজব ছড়াচ্ছে।
সূত্রমতে, সোনার বাংলা বাজার এলাকার চায়ের দোকানদার হারুনের স্ত্রী পেটের ব্যাথায় ভুগছিলেন। তবারক খেয়ে তার পেটের ব্যথা সেরে যায়। একই এলাকার ৫ বছরের একটি ছেলে কথা বলতে পারছিল না। সফি পাগলার দ্বারস্থ হলে সে ঠিকমত কথা বলা শুরু করলে লোকজনের ভীড় আরো বাড়তে থাকে। ঢাকা থেকেও রোগীরা আসছে সফি পাগলার সোনার বাংলাস্থ দরবারে। এভাবেই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ঢাকার উত্তর মাইজদি গাবতলী এলাকা থেকে সফি পাগলার কাছে আসা হাবিবুর রহমান বলেন, আমি শারীরিক ও মানষিক অসুস্থ্য ছিলাম, সফি পাগলার তদবিরে ভাল হয়ে গেছি। মাদারীপুর ইটের পুল থেকে আসা নাসিমা বেগম (৩৭), শিরিনা বেগম (৪০), রোকেয়া (৫০), পারুল বেগম (৫০) বলেন, কোমরে ব্যাথা এবং আমাদের এক ভাই নিখোঁজ রয়েছে, তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমরা সফি পাগলার কাছে এসেছি। এদিকে সফি পাগলা অনেক মানুষের হাতে পাথর দিয়ে বলে যা পাথর নিয়ে ব্যবহার করলে নিয়ত করা সব রোগ ভাল হয়ে যাবে। আবার অনেককেই পানি পড়া দিয়ে দেয়।
সফি পাগলা চথলবাড়ী নদী ভাঙ্গন রোধে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিশানা টানিয়ে বলেছে নদী আর ভাঙবে না, ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় চর পড়ে যাবে। গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো ভীড় জমাচ্ছে সফি পাগলার আস্তানায়। ফকিরের আবির্ভাবের ঘটনা জেনে স্থানীয় সাংবাদিকরা আস্তানায় গিয়ে তার ছবি তুলতে চাইলে সফি পাগলা তাতে বাঁধা দিয়ে বলেন, ছবি তুললে আপনার সমস্যা হতে পারে। পূর্বে আমার ছবি তুলতে গিয়ে এক সাংবাদিক মারা গেছে। তিনি দাবি করেন, খোয়াজ খিজির (রঃ) সিদ্ধী করতে করতে বিভিন্ন মাজারে ঘুরে আমি হযরত শাহ সফি পাগলা নামে পরিচিত হই। সফি পাগলা জানান, তার নিকট আগত রোগীদের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেয়া হচ্ছে না। যদি কেউ খুশী হয়ে দান করে তা দিয়ে তবারক করে রাতে বিলিয়ে দেয়া হয়।
উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বাদল বলেন, রোগ ভাল হওয়ার গুজব ছড়িয়ে এরকম মাঝে মাঝে প্রতারকদের আর্বিভাব ঘটে। সাধারন মানুষদের বোকা বানিয়ে এরা অর্থনৈতিক ফায়দা লুটে। এটাকে আমি কখনোই সমর্থন করি না। তিনি আরো বলেন, সোনার বাংলা এলাকায় এরকম এক ফকিরের কথা শুনেছি। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলেও জানান।