১০টার পরে ভোট চাইতে আসা বন্ধ করতে হইবে

মেম্বারদের ভোটের কারনে রাইতে ঘুমাইতে পারি না। সরকার হুনচি (শুনেছি) কত আইন করছে এইয়া কি তার মধ্যে পড়ে নাই? কথাগুলো অনুযোগের সাথে বললেন চরপাঙ্গাশিয়া গ্রামের আঃ মন্নান হাওলাদার(৬৫)। একই এলাকার আলকি বেগম(৫৫) বলেন, ‘হুনছি ৮টার পর মাইক দিয়া ভোট চাইতে পারবে না। মোরা শীতের মধ্যে সন্ধায়ই ঘুমাইতে চাইলেও ভোট চাওয়ার কারনে ঘুমাতে পারি না। কবে যে এই কষ্ট থেকে আল্লায় মোগো মুক্তি দিবো?

উত্তর রাজদী গ্রামের জয়নাল বেপারী(৬০) বলেন, ‘শীতের কষ্টে পোলা-পাইন (সন্তান) লইয়া লেপের মধ্যে শুইলেও ঘুমাতে পারি না। একবার চেয়ারম্যান, একবার মেম্বার আরেকবার মহিলারা তারপর অমকভাই-তমোকভাইর লোকজন আইয়া দুয়ার খুইল্যা ভোট চায়। বারবার দুয়ার খুলতে খুলতে রাইত পোহাইয়া গেলেও ভোট চাওয়া আর শেষ হয় না’। একই এলাকার পারভিন বানু(৪২) বলেন, ওগো শীতও কি করে না? রাইতে ভোট চাইয়া যাইতে না যাইতেই আবার সকালে আযান দেয়ার সময়ই আইসা হাজির হয়। মোগো খালি কষ্ট দেয়। এই কষ্টে ওগো ভোট আরো কইমা যাবে’।
মিনাজদী গ্রামের আঃ খালেক হাওলাদার(৪৫) বলেন, ‘যাগো কোনো দিন দেহি নাই তারাও আহে ভোট চাইতে। রাইতে দুয়ার না খোললে ওরা ভাইঙা আহে। শীতে মোগো কষ্ট দেয়। রাইত ১০টার পরে ভোট চাইতে আসা সরকারের বন্ধ করতে হইবে’।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৩জন, ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩০জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী  উপজেলা আ’লীগের সহসভাপতি খায়রুল আলম খোকন বেপারী, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন মুন্সি ও আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন মেয়র পদে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন। বসে নেই সাধারণ কাউন্সিলর ও মহিলা সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। ৪২জন প্রার্থী, দল ও সমর্থকেরা রাত-দিন ২৩হাজার ৮শ’৩৪জন ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন যে যার মতো করে।

শিকারমঙ্গল গ্রামের কয়েকজন ভোটার বলেন, ‘দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা প্রর্যন্ত মাইকিং করার আইন করায় আমরা নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদ জানাই। এই আইনের মধ্যে রাত ১০টার পর প্রার্থীদের বিরক্ত করা যাবে না এমন নির্দেশনা অন্তভূক্ত করার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি’।