পড়েছেন সংস্কারপন্থী নেতা সাবেক এমপি মোশাররফ হোসেন মঙ্গুকে। এখানকার বিএনপিতে চরম বিতর্কিত এই নেতা পৌরনির্বাচনে দলীয় সমর্থিত প্রার্থীর প্রকাশ্যে বিরোধিতা করে আ’লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে ফের বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। এ কারনে মুলাদী বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছে। দল থেকে বহিস্কারের জোর দাবী তুলেছে নেতা-কর্মীরা।
মোশাররফ হোসেন মঙ্গু ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে সংস্কারপন্থীদের দলে ভীড়ে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে নানা বিষেধাগারমূলক বক্তব্য দিয়ে ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ কারনে একাধিকবার দলের নিবেদিত কর্মীদের হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন। ওই সময়েও তাকে মুলাদীতে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছিল কর্মীরা। কর্মীদের তোপের মুখে পড়ে দীর্ঘ দিন তিনি নিজ এলাকা মুলাদীতে যেতেও পারেন নি। ওয়ান ইলেভেনের পরবর্তী পেক্ষাপটে হাইকমান্ডে নিজের কৃতকর্মের অনুশোচনায় অনেক অনুনয় বিনয় করে ক্ষমা চেয়ে পার পান। অতঃপর চতুর এই সংস্কারপন্থী নেতা মঙ্গু বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদ ভাগিয়ে নিতেও সক্ষম হয়েছে। অপরদিকে তিনি একাই সব গলদকরনের মনোভাবে হিজলা-মুলাদী বিএনপিতে গ্র“পিং রাজনীতির সৃষ্টি করে দলকে ধ্বংসের মুখোমুখি দাড় করিয়াছে।অভিযোগ রয়েছে তিনি দলের কোন নিবেদিত নেতাকে ৫ বারও বহিস্কার করেছেন। তার অসাংগঠনিক কথার বাইরে কেউ চললেই তার উপর সাংগঠনিক খড়গ নেমে আসত। হিজলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পদক দেওয়ান মাইনুল হাসান দুলালকে পাঁচ বার বহিস্কার করেন। মাইনুল হাসান দুলালকে বাদ দিয়ে সাধারন সম্পাদকের আসীনে বসান মেজবাহ উদ্দীন চৌধুরী অপুকে। এছাড়া তিনি মুলাদী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি বেশ কয়েক বার পরিবর্তন করেন।কিন্তু কমিটি পরিবর্তনের কোন কপি কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করেন নি। তত্তাবধায়ক সরকারের আমলে মুলাদী বিএনপির আহবায়ক দেওয়ান মোঃ শহিদুল্লাহকে পরিবর্তন করে আহবায়ক করেন সার্জেন্ট (অবঃ) আনোয়ার হোসেন দুলালকে। তাকে পরিবর্তন করে আহবায়ক করেন মীর আবদুল মাজেদকে।তাকে পরিবর্তন করে আহবায়ক করেন আনোয়ার হোসেন দুলালকে। ফের তাকে বাদ দিয়ে আহবায়ক করেন আবদুল হাইকে। একাধিক বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান আনোয়ার হোসেন দুলাল ছিল দলের নিবেদত। তাকে বাদ দেয়ার রাগে ক্ষোভে দুঃখে অভিমানে তিনি হার্টএটাকে মারা যান। তার মৃত্যুর জন্য মোশাররফ হোসেন মঙ্গুই দায়ী।
এদিকে পৌর নির্বাচনে মুলাদী বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশীদ খান। কিন্তু সাবেক এমপি সংস্কার পন্থিনেতা মোশাররফ হোসেন মঙ্গু ও উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আসাদ মাহমুদ প্রকাশ্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আ’লীগ প্রার্থীকে জয়ী করতে মাঠে নামে। নির্বচনের দিনও মঙ্গু ও আসাদ মাহমুদ আ’লীগ প্রার্থী শফিকুজ্জামান রুবেলের পক্ষে ভোট চেয়েছে। দলের নিবেদিত কর্মীরা জানায়,৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক নান্নু মল্লি¬ক বিএনপি দলীয় প্রার্থীর বিরোধীতা করে জাপা প্রার্থীর দোয়াত কলম মার্কার এজেন্ট হয়। যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবেদুর রহমান হুমায়ুন প্রকাশ্যে চারদলীয় জোট প্রার্থীর দেয়াল ঘড়ি মার্কার বিরোধীতা করে। যার কারনে সাধারণ ভোটাররা দ্বিধা-বিভক্তি হয়ে যায়।
মুলাদী কলেজের শিক্ষক ইকবাল হোসেন জানান, বিএনপির অন্তর্দ্বন্দ্বের কারনে নির্বাচন শেষ হতে না হতেই মুলাদী উপজেলা জুড়ে সর্বত্রই আলোচনা চলছে মুলাদীর বিএনপির সংস্কার পন্থীদের কারনেই এবার পৌর সভার মেয়র পদটি হাতছাড়া হয়ে গেছে । ৪ দলীয় জোট প্রার্থীর প্রকাশ্য বিরোধীতাকারী ও অন্য প্রার্থীর হয়ে ভোট চাওয়া বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন মঙ্গু, আসাদ মাহমুদসহ তাদের পক্ষাবলম্বনকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান বিএনপির তৃণমৃল নেতা-কর্মীরা। তাদের মতে গত পৌর নির্বাচনে এ পৌর সভায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছিল থানা বিএনপির সভাপতি বর্তমান উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুস ছাত্তার খান । এবার পৌর নির্বাচনে দলের অভ্যান্তরীন কোন্দলের কারনেই এখানে বিএনপির শোচনীয় পরাজয় হয়েছে বলে দাবী করেছেন উত্তর জেলার সহ সভাপতি অধ্যাপক শরিয়তুল্লাহ । উত্তর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আলম রাজু বলেন দল যাকেই মনোনয়ন দেয় তার পক্ষেই দলের নেতা-কর্মীদের কাজ করা উচিৎ। কিন্তু সংস্কারপন্থী নেতা বলে পরিচিত মোশাররফ হোসেন মঙ্গু দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারনা চালিয়ে আ’লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছে।এরকম ব্যাক্তির কারনে দল ক্রমেই ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে।সুতারং দলের বিপক্ষে অবস্থানকারীদের উচিৎ সংগঠন থেকে বের করে দেয়া।
এ প্রসঙ্গে মোশাররফ হোসেন মঙ্গুর ব্যাক্তিগত সেল ফোনে দুপুর ২টায় যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ করেন তার সহধর্মীনি। তিনি বলেন সাহেব ঘুমাচ্ছেন।ঘন্টাখানেক পরে ফোন করুন।ঘন্টাখানেক পরে ফোন দিলে তার সেল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।